আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে অপরিশোধিত তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট- ওপেক। ইরানের অভিযোগ, সদস্য দেশগুলোর বদলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।
এদিকে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বিশ্ববাজারে তেলের দরপতন ঠেকাতে সৌদি আরব ও রাশিয়াকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ইরানের সাথে বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েন। যার জেরে বিশ্ববাজারে তেহরানের তেল রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করতে গত ক’মাস ধরেই তৎপর ওয়াশিংটন।
অবশ্য মস্কো সফরে এসে মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী বলেছেন, ইরানের অভাব নজরেই পড়বে না, যদি তেল সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব আর রাশিয়া নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী রিক পেরি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের ঘাটতি পূরণে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও রাশিয়ার যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। ৩ দেশের যৌথ ভূমিকায় দেড় বছরের মধ্যে তেলের বাজারে ইরানের অভাব দূর হবে।
কিন্তু রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবরোধ চলছে। এমন পরিস্থিতিতেও মস্কোর আন্তরিকতা চায় ওয়াশিংটন।
রিক পেরি আরও বলেন, সভ্য আচরণের প্রমাণ দিলে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রশ্ন বিবেচনা করা হতে পারে। ইউক্রেন আর অন্যান্য প্রতিবেশিদের সাথে রাশিয়া সুসম্পর্ক গড়ে তোলা, অন্য দেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা- এসবের আগ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহালই থাকবে।
জবাবে অর্থ-বাণিজ্যের সব খাতেই ওয়াশিংটনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আশাবাদ প্রকাশ করেছে মস্কো।
রুশ জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডা নোভাক বলেন, জ্বালানি ইস্যুতে বিরোধ দূর করতে আলোচনার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি আমরা। রাশিয়ায় ব্যবসারত মার্কিন প্রতিষ্ঠান বা তৃতীয় পক্ষগুলোর ব্যাপারে সহযোগিতা করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় মস্কো।
এদিকে তেলের বাজার জিম্মি করে রেখেছে সৌদি আরব ও রাশিয়া- এমন অভিযোগ করেছে ইরান। ওপেকের ইরানি গভর্নর হুসাইন কাজিমপুর আর্দিবিলি বলেন, সৌদি আরব-রাশিয়া তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করার দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে দেশ দু’টো বিশ্ববাজারে ইরানের অংশে ভাগ বসানোর চেষ্টা করছে।
পশ্চিমাদের লাগাতার নিষেধাজ্ঞায় বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইরান। পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পরই তৈরি হয় এ পরিস্থিতি।
Leave a reply