সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন লালমনিরহাট, এক আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির

|

ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পুরান বাজার তথা কালিবাড়ি এলাকায় একই উঠানে মন্দির-মসজিদ। যে উঠানে ঈদের নামাজ-মাহফিল, সেই প্রাঙ্গনেই দুর্গাপূজা। এক পাশে মন্দিরের ভেতরে উলুধ্বনি, আরেক পাশে শোনা যায় আজান। কোনো মতবিরোধ ছাড়াই দেড়শ’ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এমন সহাবস্থান। যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিচিত বাংলাদেশ।

কালীবাড়ি মন্দিরের পুরোহিত শ্রী শংকর চক্রবর্তী বলেন, মসজিদে যখন নামাজ হয়, আমাদের ঢাকের বাদ্য তখন বন্ধ থাকে। আমরা মিলেমিশে একাকার হয়ে আছি। আমাদের মধ্যে কোনো বৈষম্য নেই।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, আমরা যখন নামাজ পড়ে চলে যাই, তারপর ওনারা তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করে। এভাবেই আমাদের এখানকার লোকজন শান্তিপ্রিয়ভাবে সৌহার্দ বজায় রেখে অবস্থান করে।

শতাব্দী পুরনো সম্প্রীতির বীজ আজ বিশাল মহীরূহতে পরিণত হয়েছে। যার শেকড়ে আছেন স্থানীয় সামাজিক অবস্থা আর সংস্কৃতি। সনাতন ধর্মালম্বী একজন বলেন, আমরা এখানে হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই। ওরা নামাজের সময়ে নামাজ পড়ছে, আমরা পূজার সময়ে পূজা করছি। আমরা অনেক ভালো আছি, শান্তিতে আছি। ইসলাম ধর্মালম্বী আরেকজন বলেন, আমরা এখানে দেড়শ’ বছরের বেশি সময় ধরে দুই সম্প্রদায়ের লোক একসাথে বসবাস করছি। আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব-বিভেদ নেই।

লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন বলেন, এখানে কখনও কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি হয়নি। এখানে মসজিদ ও মন্দির একই আঙ্গিনায়। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্যই এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণস্বরূপ।

স্থানীয়রা জানায়, ১৮৩৬ সালে দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এখানে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কারণে পুরান বাজার এলাকাটি অনেকের কাছে ‘কালীবাড়ি’ নামে বেশি পরিচিত। পরবর্তী সময়ে মন্দির প্রাঙ্গণে ১৯০০ সালে একটি নামাজের ঘর নির্মিত হয়। পরে নামাজের ঘরটিই ‘পুরান বাজার জামে মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply