গতি ফিরেছে প্রবাসী আয়ে, অক্টোবরেই এসেছে ১৯৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স

|

ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী আয়। অক্টোবর মাসে দেশে এসেছে ১৯৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা গত মাসের চেয়ে প্রায় ৪৮ শতাংশ বেশি। ডলারের দামের কারণে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এ জন্য হুন্ডি কারবারি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গত কয়েক মাস ধরেই রেমিট্যান্স আয় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় খাত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় এ খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ডলার সংকটের মধ্যে প্রবাসী আয়ে ধস নামে, যা কর্তা ব্যক্তিদের চিন্তার কারণ হয়ে পড়ে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয়ে। অক্টোবরে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৯৮ কোটি ডলার, যা আগের মাসের চেয়ে ৬৪ কোটি ডলার বেশি।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেজবাউল হক নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরকারি প্রণোদনা তো আছেই, পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও রেমিটারদের প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ এখনও কম। এটি আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। এ জন্য হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। সেই সাথে অর্থপাচারও ঠেকাতে হবে।

কিরণ শ্রম অভিবাসনের বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চোধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় দাগ হলো অর্থপাচার। অর্থপাচার বন্ধ না করা পর্যন্ত হুন্ডি কারবারিরা অর্থ সংগ্রহ করবেই। এখন সামান্য লাভের আশায় বিদেশ থেকে যারা টাকা পাঠাবে, তারা এই হুন্ডি কারবারিদের কাছেই টাকা পাঠাবে।

জয়তুন বিজনেস সলিউশনের চেয়ারম্যান আরফান আলী জানান, কম দাম দেখিয়ে আমদানি করার প্রবণতা না কমা পর্যন্ত হুন্ডির কারবারি বন্ধ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া যারা অর্থ পাচার করতে চান, যেকোনো মূল্যেই তারা দেশের বাইরে টাকাগুলো পাঠিয়ে দেন। কারণ, তাদের কাছে দেশে এই টাকা ব্যবহারের সুযোগ নেই।

প্রবাসী আয় বাড়াতে দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর পাশাপাশি সরকারি প্রণোদনার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে বলেও মত বিশ্লেষকদের। ব্যাংকিং মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সুবিধা প্রবাসীদের কাছে তুলে ধরার বিষয়েও গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।

জয়তুন বিজনেস সলিউশনের চেয়ারম্যান বলেন, রেমিটেন্সে যারা টাকা পাঠান, তাদের সেই টাকা আড়াই শতাংশের স্থানে ৫ শতাংশ করতে তো কোনো সমস্যা নেই। টাকা তো আমাদের দেশেই আসছে। তাছাড়া রেমিটেন্স প্রদানকারীদের ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা আছে। এর প্রচারণা বাংলাদেশ ব্যাংক করছে, তবে এর পাশাপাশি এনবিআর এরও করা দরকার।

কিরণ শ্রম অভিবাসনের বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চোধুরী বলেন, ভারত বা শ্রীলংকা যে পারমাণে শ্রমিক ও দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠায় এবং তারা যে পরিমাণ বেতন পায়, আমাদের কর্মীরা সে পরিমাণ বেতন পায় না। আমরা ৮-১০ লাখ লোক পাঠিয়েও যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারি, ভারত বা শ্রীলংকা তার অর্ধেক সংখ্যক অথচ অধিক দক্ষ লোক পাঠিয়ে আমাদের তুলনায় বেশি অর্থ আয় করতে পারছে।

প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পদ্ধতি আরও সহজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply