বিমানবন্দরে স্বর্ণ চুরি, তিন সপ্তাহেও হয়নি সুরাহা

|

আব্দুল্লাহ্ তুহিন:

তিন সপ্তাহেও বিমানবন্দরে স্বর্ণ চুরির অভিযোগের কোনো সুরাহা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বহুল আলোচিত ঐ ঘটনায় প্রথমে পাত্তা না দিলেও একদিন পর বাড়ি থেকে ডেকে এনে ভুক্তভোগীদের মামলা নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তারপর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো খবর নেয়নি কর্তৃপক্ষ। উদ্ধারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতিও জানায়নি তারা। তবে ভুক্তভোগীদের সন্দেহ, শাহজালালে বিমানের কার্গোহোল থেকেই গায়েব হয়েছে স্বর্ণ।

সিঙ্গাপুর ফেরত যাত্রীর লাগেজ থেকে চুরি যাওয়ার এই ঘটনার পর সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শাহজালাল বিমান বন্দর কতৃপক্ষ জানায়, ঢাকায় চুরির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃত ঘটনা জানতে সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন তারা। কিন্তু ভুক্তভোগীদের সন্দেহ, শাহজালাল বন্দরে বিমানের কার্গোহল থেকে লাগেজ নামানোর কাজ করা কর্মীরাই চুরির সাথে যুক্ত।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিশির সরকার বলেন, ঢাকায় আমাকে জানানো হয়, আমার লাগেজ তালা ভাঙা অবস্থায় তারা রিসিভ করেছে। কিন্তু এটি আমাকে আগে জানানো হয়নি।

এর আগে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজে আসা সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ব্যাগ থেকে চুরির ঘটনায়ও তোলপাড় হয়েছিল সারা দেশে। শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ থেকে চুরি হওয়া এখন নিত্য দিনের ঘটনা।

এবারের ঘটনাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে দাবি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিউল আজিম বলেন, যাত্রীদের মালামাল আমাদের কাছে আমানত। তাই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা দেখবো। এখানে কারোর প্রতি কোনো নমনীয়তা দেখানোর সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে লাগেজ ভাঙা এবং চুরির অভিযোগ বার বার রাষ্ট্রীয় বিমানের সংস্থার বিরুদ্ধেই কেনো উঠছে, এমন প্রশ্নে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিউল আজিম বলেন, যাত্রীদের আভিযোগের সত্যতাও খুঁজে দেখা হবে। তাছাড়া নভেম্বরের মধ্যেই আমরা বডি ক্যামেরা ইনস্টল করতে যাচ্ছি। সেই সাথে কর্মী সংখ্যাও কমানোর পরিকল্পনা চলছে। কারণ লোক কমে গেলে, ঝুঁকিও কমবে।

তবে কারা চুরি করছে সেটি খুঁজে বের করা খুব কঠিন কাজ নয় উল্লেখ করে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, অভিযোগ আসা ওই নির্দিষ্ট ফ্লাইটের দায়িত্বে কারা ছিল, কারা কার্গোহলে ঢুকেছিল কিংবা কারা লাগেজগুলো হ্যান্ডেল করেছে তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই এটি বেরিয়ে যাওয়ার কথা।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, ঘটনার দিন থানায় গেলেও খুব একটা পাত্তা দেয়নি পুলিশ। তবে চুরির বিষয়টি দেশব্যাপী গণমাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর তড়িঘড়ি তাদের খবর দিয়ে ডেকে এনে নাম মাত্র মামলা নেয়া হয়। তবে এরপর আর কোনো খোঁজ খবর দিতে পারেনি বিমানবন্দর থানা।

ভুক্তভোগী শিশির সরকার বলেন, কারো কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাচ্ছি না আমরা। কোথায় গিয়ে সমাধান হবে তাও বুঝতে পারছি না। এক কথায় আমাদের সম্পূর্ণ দিশেহারা অবস্থা। চুরি যাওয়া স্বর্ণ ফেরত পাবো কিনা তাও জানি না।

বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি ও মালামাল খোয়া যাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এসব ভোগান্তির বিষয়ে শুধু মাত্র লিখিত অভিযোগ নেয়া হলেও বেশিরভাগ ঘটনারই সুরাহা হয় না। তাই শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতিদিনই বাড়ছে ভুক্তোভোগীর সংখ্যা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply