পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের পাল্লা! শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

|

চারদিকে যখন যুদ্ধের দামামা, তখনই নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে পারমাণবিক অস্ত্র। রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কার্যক্রমে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি আবারও দুই পরাশক্তির মধ্যে শুরু হচ্ছে ভয়াবহ অস্ত্র পরীক্ষার প্রতিযোগিতা? এরই মধ্যে পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রও হিরোশিমায় ছোড়া পারমাণবিক বোমার চেয়েও বহুগুণ শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে। দুই শক্তিশালী দেশের এই আচরণেই শঙ্কা বাড়ছে আরও। খবর রয়টার্সের।

সম্প্রতি, আনুষ্ঠানিকভাবে পরমাণু পরীক্ষা নিষিদ্ধের কম্প্রিহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিটি বা সিটিবিটি চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। এরপরই আলেজান্ডার থ্রি নামের সাবমেরিন থেকে পরমাণু অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে মস্কো। বলা হচ্ছে, এটি মস্কো পারমাণবিক পরীক্ষার সবশেষ ধাপ। এদিকে চলতি মাসেই, নেভাদার পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রে উচ্চ-বিস্ফোরকের পরীক্ষা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০৩০ সালের মধ্যে হিরোশিমায় ছোড়া লিটল বয়ের চেয়েও ২৪ গুণ শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে পেন্টাগন।

এই রাসায়নিক অস্ত্র কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই তার সাক্ষী হয়েছিল জাপান। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মাত্র দুটি বোমার বিস্ফোরণে একসাথে মৃত্যু হয় প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষের। বোমার প্রভাবে পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরও অন্তত ২ লাখ জাপানিজ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে শুরু হয় স্নায়ু যুদ্ধ। পরাশক্তি হওয়ার লড়াইয়ে নেমে একের পর এক রাসায়নিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে শুরু করে দেশ দু’টি। যা চলে গত শতকের শেষ দশক পর্যন্ত।

পরবর্তীতে শক্তিমত্তা প্রদর্শনের এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীনের মতো দেশগুলো। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ২ হাজারের বেশি পরমাণু পরীক্ষা চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র একাই চালিয়েছে ১ হাজারের বেশি পরীক্ষা।

ওই সময় ক্রমেই যখন পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল বিশ্ব, নানা মহলের তৎপরতায় এই প্রতিযোগিতা বন্ধে সিটিবিটি চুক্তি হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীনের মতো দেশগুলো এই চুক্তির অংশ না হলেও একুশ শতকে উত্তর কোরিয়া ছাড়া আর কোনো দেশ প্রকাশ্যে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি।

তবে আবারও প্রকাশ্যে পারমাণবিক পরীক্ষা ও শক্তিমত্তা প্রদর্শন শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। পরিস্থিতি যেভাবে জটিল হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, আরও একটি স্নায়ুযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বিশ্ব। যদিও রাশিয়া বলছে, চুক্তিতে না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের উস্কানি ছাড়া পরমাণু পরীক্ষা চালাবে না তারা। আর যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, কোনো পক্ষকে উস্কানি দিতে নয় বরং নিজেদের নিরাপত্তা জোরদারেই নেয়া হচ্ছে এসব পদক্ষেপ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply