হেসেখেলে ডাচদের হারিয়ে সেমির প্রস্তুতি সারলো অপ্রতিরোধ্য ভারত

|

ছবি: সংগৃহীত

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই চলতি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট কেটে রেখেছিল ভারত। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল কেবলই সেমির প্রস্তুতি সেরে রাখা। সেখানেও শতভাগ সফল রোহিত শর্মার দল। বিশ্বকাপে নিজেদের নবম ম্যাচে ডাচদের ১৬০ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শতভাগ জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে ভারত। আগে ব্যাট করতে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুলের জোড়া সেঞ্চুরি এবং শুভমান গিল, রোহিত শর্মা ও ভিরাট কোহলির ফিফটিতে ৪১০ রানের পাহাড় গড়ে মেন ইন ব্লু’রা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৩ বল বাকি থাকতেই ২৫০ রানে গুটিয়ে যায় ডাচরা।

রোববার (১২ নভেম্বর) বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়া ৪১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। দলীয় ৫ রানের মাথায় মোহাম্মদ সিরাজের বলে উইকেটের পেছনে রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওয়েসলি বারেসি। এরপর ৬১ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যান। ৩২ বলে ৩৫ রান করা অ্যাকারম্যানকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙ্গেন কুলদীপ যাদব।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ইনিংসের ২৩তম ওভারে বল হাতে আসেন ভিরাট কোহলি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে শিকার করেন কোহলি। উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল ক্যাচটি নিতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তিনি। উদযাপনে সামিল ছিলেন কোহলির স্ত্রী আনুশকা শর্মাও। তিনি গ্যালারি থেকেই অভিনন্দন জানান কোহলিকে। এছাড়াও এদিন বল হাতে দেখা যায় সুরিয়া কুমার যাদব, শুভমান গিলকে।

ডাচদের হয়ে বারেসি ছাড়া পরের আট ব্যাটারই পেয়েছেন দুই অঙ্কের দেখা। কিন্তু নিদামানুরু ছাড়া ইনিংস বড় করতে পারেনি কেউ। ৩৯ বলে ৫৪ রান করে শেষ ব্যাটার হিসেবে রোহিত শর্মার বলে আউট হন তিনি। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন ভিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা।

এর আগে, টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ভারতকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার গিল ও রোহিত। ইনিংসের শুরু থেকেই চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন ভারতীয় এই দুই ওপেনার। পাওয়ারপ্লেতে ভারতীয় ওপেনারদের কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেননি ডাচ বোলাররা। তাতে করে প্রথম ১০ ওভারে ভারত কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৯১ রান। পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গিল।

তরুণ এই ওপেনার পঞ্চাশ স্পর্শ করেন মাত্র ৩০ বলে। যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর দ্রুতই ফিরতে হয়েছে তাকে। পল ভ্যান মেকেরিনের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন গিল। তবে সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা নিদামানুরু লাফিয়ে উঠে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নিলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন গিল। এই ওপেনার ফেরার পর হাফ সেঞ্চুরি দেখা পান রোহিতও।

পঞ্চাশ ছুুঁতে ভারতের অধিনায়ককে খেলতে হয়েছে মাত্র ৪৪ বল। গিলের মতো হাফ সেঞ্চুরির পর আউট হন রোহিতও। বাস ডি লিডের ব্যাক অব লেন্থ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যারেসির হাতে ধরা পড়েন ৬১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে টানতে থাকেন কোহলি। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন ৫৩ বলে। যদিও তাকে ফিরতে হয়েছে ৫১ রানের ইনিংস খেলে।

এর পরের গল্পটা কেবলই আইয়ার ও রাহুলের। ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া আইয়ার তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার ছুঁয়েছেন ৮৪ বলে। সেঞ্চুরির পর আরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন আইয়ার। ডানহাতি এই ব্যাটারকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া রাহুলও সেঞ্চুরির দেখা পান। ডি লিডকে ছক্কা মেরে ৬২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহুল। যদিও সেই ওভারেই আউট হয়েছেন তিনি।

রাহুল থামেন ৬৪ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলে। রাহুলের বিদায়ে ভাঙে আইয়ারের সঙ্গে তার ২০৮ রানের জুটি। এদিকে শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে ১২৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন আইয়ার। ভারত পায় ৪১০ রানের পুঁজি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে দুটি উইকেট নেন বাস ডি লিড। এছাড়াও মারউই নেন ১টি উইকেট।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply