চান্দিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশে দলের হেড কোচের চাকরিটা সহজভাবে ছাড়েননি। অনেক জল ঘোলা করেই তবে ছেড়েছেন। এরপর, শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিয়ে ব্যর্থতার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছেন। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের কাছে গো-হারা হেরেছে হাথুরুর শিষ্যরা। এর খেসারত হিসেবে অধিনায়কত্ব খোয়াতে হয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে। তোলপাড় সৃষ্টি করেছে বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর কাছে লেখা ম্যাথুসের একটি চিঠি। কী আছে সেখানে?
বোর্ডের প্রধান নির্বাহী অ্যাশলে ডি সিলভার কাছে পাঠানো চিঠিতে ম্যাথুস লিখেছেন, তাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে। তিনি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার!
ম্যাথুস লিখেছেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বোর্ডে এক বৈঠকে নির্বাচকমণ্ডলী এবং জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আমাকে শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন। আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিস্মিত হয়েছি। আমার মনে হয়েছে, এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোটা শ্রীলঙ্কা দলের বাজে পারফরম্যান্সের খেসারত হিসেবে আমাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।
ব্যর্থতার দায় নিতে প্রস্তুত উল্লেখ করে ম্যাথুস তার চিঠিতে লেখেন, তবে শুধু আমার ওপর দায় চাপালে সেটি বিশ্বাসঘাতকতা এবং আমাকে সরানোর চেষ্টা। নির্বাচকমণ্ডলী এবং হেড কোচের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতেই সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর তাই হারের দায় শুধু অধিনায়কের ওপর চাপানো উচিত—এই যুক্তির সঙ্গে আমি একমত নই। অবশ্য, নির্বাচকমণ্ডলী ও হেড কোচ আমাকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন, আমি তা মন থেকেই সম্মান করি।
ম্যাথুস লিখেছেন, ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে টানা ৫ বছর অধিনায়কত্ব করার পর গত বছরের জুলাইয়ে তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দেন। নতুন নেতৃত্ব আসুক—সেটিই চেয়েছিলেন তিনি। হাথুরুসিংহে হেড কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্বভার পুনরায় গ্রহণ করার অনুরোধ করেছিলেন। পরিবার ও কাছের বন্ধুবান্ধব হাথুরুর অনুরোধে সাড়া দিতে না করেছিল। কিন্তু আমি হেড কোচের ওপর আস্থা রেখেছিলাম।
কিছুটা অভিমান করেই ম্যাথুস লিখেছেন, নির্বাচকমণ্ডলী এবং হেড কোচ যদি মনে করেন আমি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার মতো ফিট নই, দলে আমার জায়গা নেই তাহলে অবসর নিয়ে নেব। দলের বোঝা হয়ে কখনোাই থাকতে চাই না।
ম্যাথুসের এই চিঠি প্রকাশের পর লঙ্কান ক্রিকেটে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, গা বাঁচাতে ম্যাথুসকে বলির পাঁঠা বানিয়েছেন হাথুরুসিংহে। এবং হাথুরুকে উদ্দেশ্য করেই ‘বিশ্বাসঘাতক’ শব্দটি ছুঁড়ে দিয়েছেন ম্যাথুস।
বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেয়ার আগেও খেলোয়াড়দের সাথে গোলমাল বাঁধিয়েছিলেন হাথুরু। ফলে, এ দেশের বড় অংশের ক্রিকেট ভক্ত যে ম্যাথুসকাণ্ডে হাথুরুকেই ‘খল’ হিসেবে ধরে নেবেন তাতে সংশয় নেই।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply