মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনাই বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জ: আইএমএফ

|

বাংলাদেশে আসা আইএমএফের প্রতিনিধি দলের প্রধান রাহুল আনন্দ।

৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নজরদারি বেড়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের। তখন থেকেই আর্থিক খাতে সংস্কার, মুদ্রা বিনিময় হার ও রাজস্ব আহরণ নিয়ে বেশ কিছু শর্ত দেয় সংস্থাটি। বদলাতে বলে ডলারের রিজার্ভ হিসাবের নিয়ম। সম্প্রতি, ২য় কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশে ১৬ দিন বৈঠক করে আইএমএফ।

সে উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সংস্থাটি। বাংলাদেশে আসা প্রতিনিধি দলের প্রধান রাহুল আনন্দ জানান, কোভিডের পর থেকেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো করছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সেই লাগাম ছুটে যায়। এরপর ব্যাংক সুদ হারের সীমা তুলে নেয়ার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।

রাহুল আনন্দ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এরইমধ্যে সুদ হারের সীমা তুলে নিয়েছে। ফলে নতুন ঋণের ক্ষেত্রে সুদ এখন ১১ শতাংশের বেশি। এই কঠোর অবস্থা কিছুদিন বহাল রাখতে হবে। এটি আমাদের পরামর্শ ছিলো। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এই চড়া সুদ হারের সময় যেন আবার মূল্যস্ফীতি বেড়ে না যায়। অর্থাৎ মুদ্রানীতি আরও সঙ্কোচন করতে হবে।

ব্রিফিংয়ের আগে বাংলাদেশে আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করে আইএমএফ। এর পরামর্শ অংশে বলা হয়– এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক করার পদ্ধতি বদলাতে হবে, যেন বিশ্ববাজারে দর ওঠানামা করলে খুব বেশি সমন্বয় করতে না হয়। টাকার মান কমায় সরকারের বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বেড়েছে। তাই বিষয়টি নতুন করে ভাবার তাগিদ সংস্থাটির। একই সাথে বদলাতে হবে নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়া।

আইএমএফের এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান বলেন, তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে আমরা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও পর্যালোচনা করবো। সাথে রাজস্ব আহরণ ও সরকারি বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হবে। জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ পদ্ধতি নিয়েও আমরা ভাবতে বলেছি। এর বাইরেও আমাদের বেশ কিছু পরামর্শ আছে।

এসময় অর্থপাচার ইস্যুতে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিতের তাগিদ দেয় সংস্থাটি। রাহুল বলেন, আর্থিক খাতে সংস্কার অবশ্যই দরকার। সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও ব্যাংকে কর্পোরেট সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই। এরই মধ্যে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে পরিবর্তন এসেছে। পাশাপাশি অর্থপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে আইএমএফ।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। সাত কিস্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে এই ঋণ মিলবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বুঝে পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় কিস্তিতে পাচ্ছে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর ৩য় কিস্তি ছাড়ের আগে মার্চে আবারও বাংলাদেশে আসবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply