স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের বিরুদ্ধে এবার চকরিয়ায় জনপ্রতিনিধিদের সংবাদ সম্মেলন

|

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চকরিয়া ও পেকুয়ার জনপ্রতিনিধিরা। ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের হুমকি-ধমকি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেয়া অভিযোগের প্রতিবাদে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চকরিয়ার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন চকরিয়া ও পেকুয়ার জাফর বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা। চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুরাজপুর মানিকপুর ইউপির চেয়ারম্যান আজিমুল হকের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী।

জনপ্রতিনিধিরা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির হাতঘড়ি মার্কার প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার জনপ্রতিনিধিরা। যে কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম এবং তার পক্ষের লোকজন নির্বাচন কমিশনে এসব জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের প্রতিবাদে তারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ এলাকায় আমাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটারকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি; যা পরোক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যের সহায়ক।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে কাজ না করায় এবং বিপক্ষের হাতঘড়ি মার্কার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করায় তিনি নিজে এবং তার গঠিত নিজস্ব অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী দ্বারা অবৈধ অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গুম ও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

জাফরের কর্মী বাহিনী দ্বারা হাতঘড়ি প্রতীকের নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এমনকি ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন লাগাতেও বাধা দেয়া হচ্ছে। যা সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের হুমকি প্রদর্শন, চাপ প্রয়োগ এবং নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবং লাগাতে বাধা প্রদানের মতো অপতৎপরতা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বড় অন্তরায়।

কক্সবাজার-১ আসনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বিধান ও হয়রানি রোধে উল্লিখিত অভিযোগ যাচাই সাপেক্ষে পরবর্তী কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে ইসির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য আবু তৈয়ব, পেকুয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উম্মে কুলসুম মিনু, মগনামার চেয়ারম্যান মো. ইউনুস, বিএমচরের এস এম জাহাঙ্গীর আলম, রাজাখালীর নজরুল ইসলাম বাবুল, বদরখালীর নুরে হোছাইন আরিফ, লক্ষ্যারচরের আওরঙ্গজেব বুলেট, কাকারার শাহাব উদ্দিন, বমু বিলছড়ি মনজুরুল কাদের, ঢেমুশিয়ার মঈনুদ্দিন চৌধুরী, উজানটিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, চিরিংগার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, এই আসনে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে শঙ্কা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) চিঠি পাঠিয়েছেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি এই চিঠি দেন।

তবে, এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও নিরাপত্তা চেয়ে সিইসি বরাবর আবেদন জানায় চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ১৭ জন জনপ্রতিনিধি। তারা সবাই বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের সমর্থক বলে জানা গেছে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply