অর্থ ছাড় কমেছে ১৬%, সুদ পরিশোধ বেড়েছে ১৩৭ শতাংশ

|

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে, বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে অর্থ ছাড় কমলেও সুদ পরিশোধ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সময় বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পাওয়া ঋণের অর্থ ছাড় হয়েছে ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে তুলনায় অর্থ ছাড় কমেছে ১৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডি-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

পাঁচ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ সরকারকে পরিশোধ করতে হয়েছে ৫৬ কোটি ২২ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেশি। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ মাসে বিদেশি ঋণের অর্থ সবচেয়ে বেশি ছাড় করেছে জাপান, ৬১ কোটি ৯ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার ছাড় করেছে এডিবি।

ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে অর্থ ছাড় হয়েছে ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর একই সময়ে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ১৩৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। সে অনুযায়ী ঋণ পরিশোধে সরকারের ব্যয় হয়েছে মোট অর্থ ছাড়ের প্রায় ৪৬ শতাংশের সমপরিমাণ।

দেশের চলমান মন্থর রেমিট্যান্সের প্রভাব, ডলার সংকট ও ক্রমাগত রিজার্ভ ক্ষয়ের মধ্যেও অর্থ ছাড় কমেছে। সংকটের সময়ে অর্থ ছাড় কমলেও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ঋণের প্রতিশ্রুতি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ১১ গুণের বেশি।

অর্থ ছাড় কমার পেছনে প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতিকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ওপর অর্থ ছাড় নির্ভর করে। কারণ পাইপলাইন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কম হলে অর্থ ছাড় কমে যায়। কিছু কিছু ঋণের মেয়াদ সংকুচিত হয়ে আসায় এবং গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় সুদ পরিশোধের চাপ তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হলে এ চাপ আরও বাড়তে পারে। ২০২৬ সাল নাগাদ আরও ৫০ থেকে ২০০ কোটি ডলার পরিশোধের সময় চলে আসবে। তাই রফতানিতে নতুন করে কোনো শক লাগলে তা আরো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করবে।

আর্থিক হিসাব আগে কখনও ঋণাত্মক হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আগেই সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নজর দিতে হবে।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply