চা পাতায় হোক পৃথিবীর আবাস

|

চা পাতা, গাছ, টব, ছাদের বাগান

ছবি: গেটি ইমেজ।

এখানে প্রশান্ত মনে খেলা করে উঁচু উঁচু গাছ।

সবুজ পাতার পরে যখন নেমেছে এসে দুপুরের সূর্যের আঁচ,

নদীতে স্মরণ করে একবার পৃথিবীর সকাল বেলাকে।

আবার বিকেল হলে অতিকায় হরিণের মতো শান্ত থাকে।

এই সব গাছুগুলো; -যেন কোন দূর থেকে অস্পষ্ট বাতাস

বাঘের ঘ্রাণের মতো হৃদয়ে জাগায়ে যায় ত্রাস;

এই কথাগুলো রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের। কবির মনকে প্রশান্ত করতো গাছ। শুধু তিনি নন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরতো এক প্রকার দাবি করেই লিখেছেন ‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর ‘।

এই পৃথিবীকে আরেকটু বাসযোগ্য করে তুলতে গাছের কোন বিকল্প নেই। তবে ইট-পাথরের এই শহরে গাছের একটু ছায়া পাওয়া বড়ই দুষ্কর। শত বাঁধা সত্ত্বেও, এই শহরে ছোট ছোট বাগান পাওয়া যাবে বাড়িঘরের বারান্দা কিংবা ছাদে। প্রকৃতি প্রেমি এইসব মানুষদের সন্তানের মতো এক একটি গাছ। তবে এমন অনেকই রয়েছেন, যাদের গাছ পরিচর্যা নিয়ে বেগ পেতে হয়। অথবা বলা যেতে পারে, শখের গাছে কি খাবার দেওয়া হবে তা নিয়ে চাপে পড়ে অনেক বাগানিই। সেই চাপ থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেতে, নেয়া যেতে পারে খুব সাধারণ কিছু টোটকা।

গাছ পরিচর্যায় অন্যতম প্রাকৃতিক উপাদান চা পাতা। শুধুমাত্র এই উপাদানটি দিয়েই নেয়া যেতে পারে টবের গাছগুলোর যত্ন। দেখে নিন কীভাবে দেবেন টবের মাটিতে;

গাছভর্তি ফুল-ফল চায় না, এমন মানুষ খুঁজেই পাওয়া যাবে না ! তবে অনেক বাগানিই বুঝতে পারেন না গাছকে কি খাবার দেয়ার প্রয়োজন। বিশেষ করে টবের গাছে নিয়মিত খাবার না দিলে গাছ রুগ্ন হয়ে পড়ে। পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যায়। ফলে আসতে চায় না ফুল কিংবা ফলও। হাতের কাছে গাছের খাবার অর্থাৎ সার মজুত না থাকলে, চায়ের পাতা দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারেন।
 
চা পাতায় রয়েছে উচ্চ পরিমাণে নাইট্রোজেন। যা গাছের বেড়ে ওঠার জন্য খুব জরুরি। চা পাতায় আছে ট্যানিক অ্যাসিড। পাতা পচতে শুরু করলে মাটিতে এই ট্যানিক অ্যাসিড ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ছাড়ে। সঙ্গে মাটি ভেজা ভেজা রাখে চা।
চা পাতা সরাসরি গাছের গোড়ায় দিতে পারেন। মিষ্টি বা চিনি দিয়ে বানানো চা পাতা ব্যবহার না করাই ভালো। আর একান্ত ব্যবহার করতে চাইলে বেশ কয়েকবার ধুয়ে নিতে হবে পরিষ্কার পানিতে। এবার এই চা পাতা ১ টেবিল চামচের মতো গাছের টবে দিয়ে দিন। তারপর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেই হলো। 
মূলত নাইট্রোজেনের অভাব হলে গাছের পাতায় ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটে। ফলে পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং খাবারও তৈরি করতে পারে না। চা পাতা পানিতে ২-৩ দিন ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ছেঁকে নিয়ে সেই পানি গাছের গায়ে স্প্রে করে দিতে পারেন। সপ্তাহে ১ দিন করে। 
মনে রাখতে হবে, সরাসরি টি-ব্যাগ ভুলেও গাছের টবে দেয়া যাবে না। টি-ব্যাগে ব্যবহৃত মেটিরিয়াল মাটির সঙ্গে মিশতে অনেক সময় নিয়ে নেবে। কোনও উপকার হবে না।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, মাস্টার ক্লাস, গ্রীন গার্ডেন।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply