‘মানসিক নির্যাতনে’ গায়ে আগুন দিয়ে যবিপ্রবির গাড়িচালকের আত্মাহুতি

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, যশোর:
কর্মস্থলে ‘মানসিক নির্যাতনের’ শিকার হয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জ্যেষ্ঠ গাড়িচালক মফিজুর রহমান। শুক্রবার রাতে গায়ে আগুন দেয়ার পর সোমবার (১ জানুয়ারি) রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি যশোর সদরের শ্যামনগর পৌঁছায়। এ সময় তার মরদেহ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। এছাড়া গায়ে আগুন দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যবিপ্রবির ২২ জন চালক ও হেলপার।

মৃত্যুর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফেসবুক ভিডিওতে কর্মস্থলে ‘মানসিক নির্যাতনের’ অভিযোগ করেন তিনি। মারা গেলে এ ঘটনার সঠিক বিচারের অনু্রোধও করেন তিনি।

ফেসবুক ভিডিওতে মফিজুর রহমান বলেন, গত ৮ মাস জাফিরুল স্যার আমাকে অন্যায়ভাবে বসিয়ে রেখেছে। গত দু’দিন
আগে অফিসিয়াল কাজের জন্য চিঠি দিয়েছে এবং বলেছে আমাকে আর কখনই গাড়ি দেবে না। এ কারণে মনের কষ্টে আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, আমি যদি মরে যাই তাহলে আপনারা ওই পরিবহণ প্রশাসকের শাস্তির ব্যবস্থা করবেন।

যবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পারিবারিক মামলার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ চালক মফিজুর রহমানকে প্রায় ৮ মাস বসিয়ে রাখা হয়। এ সময় তাকে কোনো গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেয়া হয়নি। সম্প্রতি ‘জব অব নেচার’ পরিবর্তন করে তাকে অফিসের কাজে সংযুক্ত করতে চিঠি দেওয়া হয়। যেখানে তাকে পিয়নের কাজ করতে হবে বলে জানানো হয়েছিল।

পারিবারিক সূত্রে জানায়, মানসিক যন্ত্রণায় মফিজুর ২৯ ডিসেম্বর রাতে বাড়িতে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে আগুন নিভিয়ে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে দ্রুত ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এ বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসনে বলেন, একজন সহকর্মীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে ‘গ্রাউন্ডস’ করা হয়েছে। শুধু মফিজুর নয়; তিনজন চালকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও যেহেতু সে সিনিয়র ড্রাইভার এ কারণে তাকে গাড়িগুলোর অফিশিয়াল সুপারভাইজারি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে তার অভিযোগ সঠিক নয়। এরপরও যেহেতু অভিযোগ পাওয়া গেছে এ জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

/এমএইচ 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply