প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধনে হামলা, সাময়িক বন্ধ হাসপাতাল

|

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আলো জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। প্রতিবাদে স্বজনদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে পাবনার সিভিল সার্জন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী হাসপাতাল রোডে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ফজলে রাব্বির গর্ভবতী স্ত্রী অন্তরা খাতুনকে আলো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালের স্বতাধিকারী ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের তত্ত্বাবধানে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পরপরই রোগী অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ার হাসপাতালের গাড়ীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে অন্তরা খাতুনের মৃত্যু হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, অ্যানেস্থেসিয়া ভালোভাবে করা হয়নি। চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন নিহতের স্বজনেরা। এসময় হাসপাতালের এক কর্মচারীর নেতৃত্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন মানবন্ধনে স্বজনদের ওপর হামলা ও মারধর করেন। পরে ঈশ্বরদী থানা ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।

রোগীর স্বামী ফজলে রাব্বী ও শাশুড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস রুনু বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ওষুধ কিনতে বাইরে যেতে বলেন। আমরা এসে দেখি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়েছে। আমাদের ওষুধ না নিয়েই তাদের ওষুধ দিয়েই রোগীকে অপারেশন করা হয়। অপারেশনেরে পরপরই রোগী বাঁচাও বাঁচাও বলে দুইবার চিৎকার দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাড়াহুড়ো করে অপারেশন করে অন্যত্র নেয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছে। আমরা রাজশাহীতে নেয়ার পথেই রোগী মারা যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের সাথে যোগাযোগ করে তাদের চেম্বারে পাওয়া যায়নি।

আলো জেনারেল হাসপাতালের সার্বিক দায়িত্ব থাকার পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক কর্মচারী। তিনি বলেন, অভিযোগকারীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাদের মানববন্ধনে কোনো হামলা করা হয়নি।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে অভিযোগের পরপরই হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান পাবনা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। তিনি বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে সংশ্লিস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এএস/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply