ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বর্বরতার মধ্যেও, জীবনের নানা আয়োজন সারছেন, গাজার অনেক ফিলিস্তিনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদেই নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনছেন তারা। এমনকি, বসতভিটা হারিয়ে উদ্বাস্তু অবস্থাতেই, বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন কেউ কেউ। তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা বর্বরতার মধ্যে, এসব আয়োজন, ক্ষণিকের জন্য হলেও আনন্দের উপলক্ষ্য হচ্ছে গাজাবাসীর জন্য। এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নেই কোনো সাজসজ্জা। বাজছে না সানাইয়ের শব্দ। অতিথি হাতে গোনা কয়েকজন। এমন সাদামাটা আয়োজনেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন গাজা উপত্যকার নবদম্পতি মোহাম্মদ আল ঘানদোর ও ইয়াহিয়া খলিফা।
পাত্র মোহাম্মদ আল ঘানদোর বলেন, সব বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়-স্বজনকে সবাইকে দাওয়াত দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো। বোমা হামলায় সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে আমার ২০ জন ভাই-বোন শহীদ হয়েছে। যারা বেঁচে আছে তাদের নিয়ে বিয়ের আয়োজন করেছি।
বেশ ধুমধাম করেই বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলো গাজা সিটির বাসিন্দা ঘানদোর-খলিফা জুটির। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর করার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন বেশ ঘটা করেই। এরপরই শুরু হয় ইসরায়েলি আগ্রাসন। আর তাতেই ভেস্তে যায় সব পরিকল্পনা।
এখন দু’জনের ঘরবাড়িই পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। বিয়ে উপলক্ষে কেনা কোনোকিছুরই অস্তিত্ব নেই এখন। এই আগ্রাসন কবে থামবে জানা নেই সেই উত্তর। আর তাই এমন পরিস্থিতির মধ্যেই প্রিয়জনকে আপন করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দু’জন।
মোহাম্মদ আল ঘানদোর আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার অনুভূতি কি সেটা বোঝাতে পারবো না। তবে আমি আমার স্ত্রীকে সুখে রাখতে চাই। প্রতিটি নারীরই সুখে থাকার অধিকার রয়েছে। আমাদের পরিবারে এটি প্রথম বিয়ে। বেশ আয়োজন করে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলো। তবে কপালে আল্লাহ যা লিখেছেন তাই হয়েছে।
তিনমাসেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন মৃত্যুপুরী গাজা উপত্যকা। তবুও থেমে নেই ফিলিস্তিনিরা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই যতটা পারা যায় স্বাভাবিক জীবন যাপনের চেষ্টা করছেন তারা।
\এআই/
Leave a reply