খোঁজ মিলেছে কন্যা জন্ম নেয়ায় হাসপাতাল থেকে পালানো দম্পতির

|

চুয়াডাঙ্গা করেসপনডেন্ট:


কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ফেলে যাওয়া সেই বাবা-মায়ের সন্ধান মিলেছে। তারা নিজেরাই সন্তানের কাছে ফিরে আসেন। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) প্রশাসনের মাধ্যমে নবজাতককে প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে ওই নবজাতক ও মা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন পাপিয়া খাতুন। সেখান থেকে তাকে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওয়ার্ডে থাকা অবস্থায় বাচ্চাকে পাশের আরেক রোগীর স্বজন বিলকিস বানুর কাছে রেখে পালিয়ে যান নবজাতকের মা ও স্বজনরা।

পালিয়ে যাওয়ার পর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাপিয়া-আলমগীর দম্পতির ঘরে আরও তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে চতুর্থবার কন্যা সন্তান হওয়া নাবজাতককে পরিত্যাগ করেন তারা। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ, প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর নবজাতককে হাসপাতালের দায়িত্বে রাখে। খবর ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্তেই।

পরদিন শুক্রবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরার সাথে যোগাযোগ করেন নাবজাতকের বাবা। পরে সকল যাচাই-বাছাই শেষে নবজাতককে প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করে প্রশাসন। বর্তমানে নবজাতক ও মা হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছেন।

আরও পড়ুন: ‘চতুর্থবার কন্যা সন্তান হওয়ায় নবজাতককে ফেলে পালালেন মা-স্বজনরা’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে নিজেদেরকে আলমডাঙ্গা উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের পাপিয়া-আলমগীর দম্পতি হিসেবে পরিচয় দেন। সে পরিচয় অনুসন্ধান করে কাউকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। পরে দেখা যায় তাদের নাম ঠিক থাকলেও ঠিকানার তথ্য ভুল দেয়া হয়েছে। তাদের প্রকৃত ঠিকানা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিহি কেষ্টপুর গ্রামে। আর এটি তাদের চতুর্থ কন্যা সন্তান নয়, তৃতীয় কন্যা সন্তান।

নবজাতকের বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, গর্ভবতী অবস্থায় আমার স্ত্রী পাপিয়া খাতুন তার মায়ের বাড়ি আলমডাঙ্গার পুটিমারী গ্রামে ছিলেন। গতকাল হাসপাতালের আসার সময় তারা আমাকে জানিয়েছে যে, আমার বাচ্চাটি আর বেঁচে নেই। আমি ধরেই নিয়েছি আমার বাচ্চা মরে গেছে। কিন্তু পরে খবর পেলাম এটিই আমার বাচ্চা।

নবজাতকের মা পাপিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে বোঝানোর জন্য বাচ্চার মৃতের কথা বলেছিলাম। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, প্রকৃত অভিভাবকের কাছে নবজাতককে হস্তান্তর করা হয়েছে। এজন্য তাদের কাছ থেকে লিখিত নেয়া হয়েছে। একইসাথে পরবর্তীতে ওই নবজাতকের খোঁজখবর রাখবে প্রশাসন।

/এএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply