গত বছর সারাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ১০২ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয়েছেন ২৮১ জন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের উৎস বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো, বৈদ্যুতিক গোলযোগ, গ্যাসের লাইন ও চুলা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়, ২০২৩ সালে গড়ে প্রতিদিন ৭৭টি করে বছরে ২৭ হাজার ৬২৪ টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। মোট সম্পদের ক্ষতি হয় ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার। আগুন নেভানোর সময় ৪৮ জন বিভাগীয় কর্মী আহত এবং যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ জন কর্মী নিহত হয়।
কারণভিত্তিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগে ৯ হাজার ৮১৩টি (৩৫.৫২%), বিড়ি- সিগারেট জ্বলন্ত টুকরো থেকে ৪ হাজার ৯০৬টি (১৭.৭৬%), চুলা থেকে ৪ হাজার ১১৭টি (১৫.১১%), ছোটদের আগুন নিয়ে খেলার কারণে ৯২৩টি (৩.৩৪%), গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে ৭৭০টি (২.৭৯%), গ্যাস সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ১২৫টি (০.৪৫%) এবং বাজি পোড়ানো থেকে ৮৭টি আগুনের ঘটনা ঘটে। সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি ৬ হাজার ৯৫৬ টি (২৫.১৮%) আবাসিক ভবন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবহন খাতে দেখা গেছে, স্থলপথের যান ৫০৬টি, ট্রেন ১২টি ও ৭৩টি নৌযানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আবাসিক ভবনের বাইরে বাণিজ্যিক ও ব্যাবসাখাতের বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গোয়ালঘর ও খড়ের গাদায় ৪ হাজার ২৭৭টি, রান্না ঘরে ২ হাজার ৯৩৮টি, দোকানে ১ হাজার ৮২১টি, হাট-বাজারে ১ হাজার ২৬৪টি, শপিংমলে ৭৫৯টি, পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৪০৩টি, হাসপাতাল-ক্লিনিক-ফার্মেসিতে ২৪৮টি, হোটেলে ২৪৬টি, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ২৩২টি, বস্তিতে ১৯৯টি, বহুতল ভবনে ১৪৭টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৪০টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৯৬টি এবং পাটের গুদাম ও কলে ৯৪টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
২০২৩ সালে মাসভিত্তিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে মার্চ, মে ও এপ্রিল মাসে যথাক্রমে ৩ হাজার ৩’শ ৩৪, ৩ হাজার ২’শ ৩৫ ও ৩ হাজার ১’শ ৪১ টি। অপরদিকে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সবচেয়ে কম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আগুনের ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যায় নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। ২৮১ জন আহতের মধ্যে পুরুষ ২২১ ও নারী ৬০ জন এবং নিহত ১০২ জনের মধ্যে ৭৩ জন পুরুষ ও ২৯ জন নারী।
/এমএইচআর
Leave a reply