কারাগারে নাভালনির মৃত্যু: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শোক পালন

|

কারাগারে রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা নাভালনির মৃত্যুতে শোক পালিত হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। গত এক দশকে রাশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী বিরোধী এই নেতার মৃত্যুর খবরে নিউইয়র্ক, লন্ডন এবং জেনেভায় নাভালনির অস্থায়ী প্রতিকৃতি এবং ছবিতে ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক জানানো হয়।

এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয় শোক র‍্যালি। বুলগেরিয়া, লিথুয়ানিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রুশ দূতাবাসের সামনে চলছে শোক পালন।

অন্যদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর কড়াকড়ি আর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দূতাবাসের সামনে নাভালনির ছবি, ফুল আর মোম নিয়েও শোক জানানো হচ্ছে। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যাকারী হিসেবে আখ্যা দেন তারা।

জানা যায়, আইনজীবী থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন নাভালনি। রাজনীতি শুরু করেন দুই হাজার সালের শুরু থেকেই। তবে আইনজীবী হিসেবে পেশাদার জীবন শুরু করা নাভালনি সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন ২০০৮ সাল থেকে। সেসময় সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ে শুরু করেন ব্লগ লেখা। ক্ষমতাসীনদের সরাসরি মদদে দুর্নীতি করা হচ্ছে এমন তথ্য উঠে আসে তার লেখনিতে। মুলত তখন থেকেই নাভালনি সরকার আর ব্যবসায়ী শ্রেণির চক্ষুশুল হয়ে ওঠেন।

ন্যাশনাল রাশিয়ান লিবারেশন মুভমেন্ট দলের অধীনে ২০১১ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন নাভালনি। ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে আবারও আসেন আলোচনায়। সেসময় তাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মুলত এরপর থেকেই জোরালো হয়ে ওঠে তার পুতিনবিরোধী অবস্থান।

কারাগার থেকে বের হওয়ার পর পুতিনবিরোধী রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন নাভালনি। তারপর থেকেই গ্রেফতার, নির্যাতন আর কারাবন্দী জীবন অনেকটাই নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। ২০১৩ সালে অর্থ চুরির দায়ে আবারও কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। নানা অভিযোগে পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রেও বারবার বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে নাভালনিকে। অংশ নিতে পারেননি ২০১৮ সালের নির্বাচনে।

শুধু কারাবন্দী জীবনই নয়, বারবার হত্যাচেষ্টার শিকারও হয়েছেন নাভালনি। ২০১৭ সালে রাসায়নিক হামলার শিকার হন। ২০২০ সালে বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল নাভালনিকে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বেঁচে যান তিনি।

গেল বছর রাশিয়ার একটি আদালত তাকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়। এরপর বেশ কিছুদিন হদিস পাওয়া যায়নি নাভালনির। পরে রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর কারাগার হিসেবে পরিচিত আর্কটিক পেনাল কলোনিগুলোর একটিতে স্থানান্তর করা হয়েছিলো নাভালনিকে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply