রুশ সরকারের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনির কারাগারে মৃত্যু নিছক কোনো ঘটনা নয়; বরং পরিকল্পিতভাবেই তাকে হত্যা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমন অভিযোগ পশ্চিমা বিভিন্ন মহলের। দাবি, পুতিন বিরোধী অবস্থান আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই কাল হয়েছে এই নেতার জন্য। নাভালনির মৃত্যু স্পষ্ট করে দিলো ভিন্নমতকে কতটা ভয় পুতিনের- এমন মতও অনেকের।
পুতিন বিরোধী অবস্থানের কারণে কারাগারেই কেটেছে অ্যালেক্সেই নাভালনি জীবনের বেশিরভাগ সময়। নির্যাতন নিপীড়নও সহ্য করতে হয়েছে অনেক।
বেশ কয়েকবার ছড়ায় তার মৃত্যুর গুজবও। তবে এবার আর গুজব নয়, আসলেই মৃত্যু হয়েছে পুতিনের কট্টর সমালোচক এই নেতার। নাভালনির এই মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি রয়েছে কোনো রহস্য? এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘদিনের পথের কাটা নাভালনিকে সরিয়ে দিতে পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে হত্যাকাণ্ড; যাতে মদদ দিয়েছেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগেও একাধিকবার তাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে রুশ সরকারের বিরুদ্ধে।
পুতিনের তীব্র সমালোচনা করে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, কারাগারে মৃত্যু হয়েছে অ্যালেক্সেই নাভালনির। অবশ্যই এর পেছনে পুতিনের হাত রয়েছে। সে যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে ততক্ষণ কে মরলো, কতজন মরলো-তাতে তার কিছু আসে যায় না।
নাভালনির মৃত্যুর দায় কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না রুশ কর্তৃপক্ষ- বলছেন পশ্চিমার নেতারা। তাদের অভিযোগ, বিরোধীমত বন্ধ করতেই এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, নাভালনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে পুতিন ভয় পেতো। তাই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নাভালনিকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে একাধিকবার। অবশেষে কারাগারেই মৃত্যু হলো তার। এর দায়ভার অবশ্যই রাশিয়াকে নিতে হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লিয়েনেরও একই মত। তিনি বলেন, পুতিন ভিন্নমতের মানুষকে কতটা ভয় পায়- তারই একটা উদাহরণ বিশ্ব দেখলো। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে তাদের পুতিনের কতটা ভয় তার প্রমাণ মিললো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশ রাজনীতিতে ‘শীতল প্রভাব’ ফেলবে নাভালনির মৃত্যু। অনেক পক্ষ বিক্ষুব্ধ হলেও দেশে কিংবা দেশের বাইরে শক্তিশালী কোনো বিরোধী দল না থাকায় কার্যত কোনো চাপে পড়বে না পুতিন সরকার।
পশ্চিমা এসব অভিযোগকে অবশ্য ভিত্তিহীন বলছে রুশ সরকার। নাভালনির মৃত্যু নিয়ে মনগড়া বিভিন্ন কথা বলে তারা নিজেদের চরিত্রেরই জানান দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে মস্কো সরকার।
এটিএম/
Leave a reply