সিলেটকে বিদায় করে প্লে অফের আরও কাছে বরিশাল

|

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ১৮ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। এই হারের ফলে দ্বিতীয় দল হিসেবে আসর থেকে ছিটকে গেলো গতবারের রানার্স-আপ দলটি। আগে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকুর রহিমের ফিফটি ও কাইল মায়ার্সের ৪৮ রানের ওপর ভর করে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। লক্ষ্য তাড়ায় মায়ার্সের বোলিং তোপে মাত্র ৪০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় সিলেট। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে বেনি হাওয়েল ও আরিফুল হক শতরানের জুটি গড়লেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামে সিলেটের ইনিংস।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বরিশালের। দলীয় ২৩ রানে ভাঙে বরিশালের উদ্বোধনী জুটি। ১৭ রান করা শেহজাদকে সাজঘরে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে বিদায় ঘটে তামিমেরও। ইনিংসের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকানো তামিম এরপর রীতিমতো ধুঁকতে থাকেন। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসা তানজিম সাকিব দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তামিমকে। লফটেড খেলতে এগিয়ে এসে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তামিম। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে ১৯ রান।

ক্রিজে এসে দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। হ্যারি টেক্টরের বলে ক্যাচ তোলার আগে ৮ বল খেলা সৌম্য ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। দলীয় ৬৫ রানে ৩য় উইকেট হারায় বরিশাল। টপ অর্ডারকে দ্রুত হারানোর ধাক্কা সামলে নেন কাইল মায়ার্স ও মুশফিকুর রহিম। মায়ার্স শুরুতে দেখে-শুনে ব্যাট চালালেও থিতু হয়ে খেলেন দারুণ সব স্ট্রোক্স। অভিজ্ঞ মুশফিক-মায়ার্সের ব্যাটিং তাণ্ডবে ১৬ ওভারে বরিশালের স্কোরবোর্ডে চলে আসে ১৪৯ রান।

বিপিএল অভিষেকে কেবল দুই রানের জন্য ফিফটি মিস করেন এই উইন্ডিজ অলরাউন্ডার। সিলেটের একাদশে সুযোগ পাওয়া শফিকুল ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে দেন দলকে। ভাঙে ৪৮ বলে মুশফিক-মায়ার্সের গড়া ৮৪ রানের জুটি। মায়ার্স ফিফটি মিস করলেও মুশফিকুর রহিম ঠিকই ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ। মাত্র ৩০ বলে মুশফিক ফিফটি উদযাপনে মাতেন। এটি এবারের বিপিএলে মুশফিকের তৃতীয় ফিফটি রানের ইনিংস। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর অবশ্য রান আউটের শিকার হন। ৩২ বলে ১৬২ স্ট্রাইক রেটে এদিন মুশি করেন ৫২ রান। দ্রুতই দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে বসে ফরচুন বরিশাল। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন মিলে ইনিংস শেষ করে আসেন। ইনিংসের শেষ ওভারে তানজিম সাকিবের তৃতীয় শিকারে পরিণত মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭ বলে ১৫ করে মিরাজ হন বোল্ড। ১২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান করে বরিশাল।

১৮৪ রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় সিলেট। মায়ার্সের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হন হ্যারি টেক্টর। একই ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকেও ফেরান মায়ার্স। ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসারের বলে এজ হয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। প্রথম স্লিপে থাকা সৌম্য সরকার বাম দিকে অনেকটা ঝাঁপিয়ে ক্যাচ লুফে নিয়ে রানের খাতা না খুলেই ফিরতে হয় শান্তকে।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে জাকির হাসানকেও হারায় সিলেট। কেশভ মহারাজের বলে মিড অনে ঠেলে দিয়ে রান নিতে চেয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলো পেরেরা। জাকির সেটাতে সাড়া দিলেও সময় মতো পৌঁছাতে পারেননি। তামিমের থ্রোতে শেষ পর্যন্ত ৫ রানে ফিরতে হয় তাকে। সিলেটের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও ইনিংস বড় করতে পারেননি। মায়ার্সের লেংথ ডেলিভারিতে স্কয়ার লেগ দিয়ে পুল করতে গিয়ে খালেদ আহমেদের হাতে ক্যাচ দেন। পরের ওভারে পেরেরাকে সাজঘরে ফেরান মহারাজ। অফ স্টাম্পে পড়ে মহারাজের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে আউট হন ১৭ রান করা পেরেরা।

দলের রান পঞ্চাশ হওয়ার আগে ফেরেন রায়ান বার্লও। মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটার। তাতে মাত্র ৪০ রানেই ৬ উইকেট হারায় সিলেট। এরপর অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন হাওয়েল এবং আরিফুল। তারা দু’জনে মিলে যোগ করেন ১০৮ রান। যেখানে ২৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন আরিফুল।

যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর দ্রুতই ফিরতে হয়েছে তাকে। ওবেদ ম্যাককয়ের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে তারই হাতে ক্যাচ দেন। আরিফুল এদিন ফেরেন ৩১ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলে। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হাওয়েলও। ২৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। শেষ ওভারে আউট হন ৫৩ রানে। তাতে হারও নিশ্চিত হয় সিলেটের।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply