শাহজাহানপুরে গ্যাস লিকেজ, ‘তিতাস’কে দায়ী করছেন এলাকাবাসী

|

রাজধানীর শাহজাহানপুরে একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে দু’দফা বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন ৬ জন। এদের মধ্যে পাঁচজন ভর্তি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। এ ঘটনার জন্য তিতাসের অবহেলাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ, লিকেজের খবর দেয়া হলেও তাতে সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় গ্যাস মিস্ত্রি কাজ করতে গেলেই ঘটে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণের ঘটনা।

শাহজাহানপুর ঝিল মসজিদের কাছের এই বাড়িটির বাসিন্দারা সকালেই গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়টি টের পান। প্রথমে তারা নিজেরাই সেটি মেরামতের চেষ্টা করেন। ম্যাচের কাঠি দিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে সকাল আটটা নাগাদ ঘটে প্রথম বিস্ফোরণ। আহত হন তিনজন। এরপরই এলাকাবাসী খবর দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষকে।

একজন প্রবীণ এলাকাবাসী জানান, সকালে বাচ্চু নামের একজন কেয়ারটেকারকে নিয়ে আসা হয়। যেই বাসায় ঘটনাটি ঘটে, সেখানে মিন্টু নামের একজন বসবাস করেন। এই দুই জন সর্বপ্রথম গ্যাস লিকেজের গন্ধ টের পান। অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও, তারা নিজেরাই লিকেজ চেক করার জন্য হয়তো ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন জ্বালাতে গিয়ে প্রথম বিস্ফোরণ হয়।

সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা মেলেনি তিতাসের কারো। তাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডাকা হয় এলাকার গ্যাসের মিস্ত্রিকে। তিনি লাইন মেরামতের চেষ্টা করতে গেলে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণ হয়। এসময় দগ্ধ হন আরও তিনজন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন নারী জানান, সকালের প্রথম বিস্ফোরণে হাত পুড়ে গিয়েছে দুজনের। তারপর তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। বিকালে যখন আমি আসি, তখন বাসায় থাকা আরেকজন বললো, এখন একটু পরীক্ষা করে দেখা যাক গ্যাস লিক হচ্ছে কি না। ঠিক তারপরই, পরীক্ষা করতে গিয়ে হয় দ্বিতীয় বিস্ফোরণ।

ঘটনার জন্য তিতাসের অবহেলাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে প্রায়ই গ্যাসের তীব্র গন্ধ পাওয়া যায় বলে অভিযোগ তাদের।

একজন ভুক্তভূগি এলাকাবাসী বলেছেন, তিতাসের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ফোন দেয়া হলে প্রায়ই তারা আসেন না। ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন না। যদি তিতাসের কর্মকর্তারা বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করতো, তাহলে আজকের এই দুর্ঘটনা ঘটতো না বলে মনে করেন তিনি।

ঘটনার পর, দগ্ধ ৬ জনকে নেয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় একজনকে। আহতদের মধ্যে একজনের শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. প্রীতম রায় বলেছেন, দগ্ধদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা এখনো গুরুতর। তাদের চেহারা পুড়ে গিয়েছে। তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা রয়েছে। সেই সাথে, সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এরপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, দুই দফায় বিস্ফোরণের পর রাতে আসে তিতাসের কর্মীরা। এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে গ্যাসের লিকেজ আছে কী না, খুঁজে দেখেন তারা। যে বাসায় দু’দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে সেটির একটি অংশে গ্যাসের তীব্র গন্ধ ছিলো রাতেও। তাই এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

\এআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply