ইসরায়েলের কারাগারে শুধু পুরুষরাই নয়, নির্যাতনের শিকার হতে হয় ফিলিস্তিনি নারীদেরও। মারধর করেই ক্ষান্ত হয় না ইহুদি সেনারা, নগ্ন করে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাদিল আল দাহদুহ নামের ২৮ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি নারী বন্দি ছিলেন ইসরায়েলি কারাগারে। সেসময় সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণনীয় নির্যাতন। শরীর থেকে খুলে নেয়া হয়েছে হিজাব, দেয়া হয়েছে হত্যার হুমকিও।
হাদিল বলেন, তারা আমাকে মাঠের মধ্যে থাকা একটি বড় গর্তে নিয়ে যায়। পরে একজন পুরুষ সেনা আমার হিজাব খুলে ফেলে। ভয়ে আমি কাঁদতে শুরু করি। হিজাব ফেরত চাইলে সে হাসতে হাসতে প্রত্যাখ্যান করে। আমাকে জীবন্ত কবর দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। বলা হয়, আমার মাংস কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে।
কারাগারে ইসরায়েলি সেনাদের বর্বরতার শিকার হয়েছেন ফাতিমা তানবোরা নামের এই ফিলিস্তিনিও। পুরুষ সেনাদের সামনেই তাল্লাশির নামে নগ্ন করেই নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ফাতিমার। ৪৭ দিনের কারাবন্দী জীবন যেন এখন এক দুঃসহ স্মৃতি।
ফাতিমা জানান, একজন পুরুষ ও একজন নারী সেনা আমাকে নগ্ন করতে চায়। আমি শরীরের কাপড় খুলতে না চাইলে তারা আমার ওপর নির্যাতন শুরু করে। পুরুষ সেনাকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করলেও সে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে জোর করে আমাকে নগ্ন করে আমার শরীরে চালায় তল্লাশি।
শুধু ফাতিমাই নয়, বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি নারীকেই তল্লাশির অযুহাতে করা হয় নগ্ন। ওষুধ, স্যানেটারি প্যাড তো দূরের কথা; দেয়া হয়নি খাবারও। ভুক্তভোগীদের বয়ানে উঠে আসে, সামান্য কারণে কীভাবে নির্যাতন চলতো তাদের ওপর।
নির্যাতিত আরেক ফিলিস্তিনি নারী লামা খাত্তার বলেন, কারাগারে আমাদের নগ্ন করে তল্লাশি করা হয়েছিল। কয়েকজন নারীকে দেহ তল্লাশির নামে নির্যাতন করা হয়। তাদের পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়। প্রতিনিয়তই ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি নারী বন্দিদের ক্যামেরার সামনে নগ্ন করে তল্লাশি করা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
ইসরায়েল বন্দি করার পর অনেক ফিলিস্তিনি নারীই নিখোঁজ হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিবেদনে। তেল আবিবের এমন নিষ্ঠুর আচরণের তদন্তের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
/এএম
Leave a reply