প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে অস্ট্রেলিয়া। ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আনাবেল সাদারল্যান্ডের অর্ধশতক ও অ্যালেনা কিংয়ের ঝড়ো ৪৬ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে অজিরা। বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ২১৪ রান।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জোত্যি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন সুলতানা খাতুন। ইনফর্ম ফোবে লিচফিল্ডকে দারুণ সুইংয়ে বোকা বানান তিনি। গোল্ডেন ডাক মেরে ফেলেন এই ওপেনার। অভিজ্ঞ এলিস পেরি থিতু হতে চেয়েছিলেন। ১০ বলে ২ রান করে তাকেও ফেরান সুলতানা। রাবেয়া খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
ক্রিজে থেকে রানের গতি বাড়াচ্ছিলেন অ্যালিসা হিলি। সবাই যখন থিতু হতেই সময় নিয়েছেন, তখন শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন হিলি। ৩৯ বলে ২৪ রান করে ভয় ছড়াচ্ছিলেন তিনিই। তবে তাকে আর বড় হতে দেননি মারুফা। এদিন শুরু থেকেই সুইং পাচ্ছিলেন এই পেসার। অজি অধিনায়ক হিলিকে ফিরিয়েছেন তিনিই। উইকেটের পেছনে জ্যোতিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অ্যালিসা হিলি।
নাহিদা আক্তার আক্রমণে এসেই ফেরান তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে। দারুণ এক সুইংয়ের ফলে পরাস্ত এই ব্যাটার। লেগবিফোরে ফিরতে হয় সময়ের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়কে। এরপরেই অবশ্য অ্যাশলি গার্ডনারকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন অভিজ্ঞ বেথ মুনি।
মুনি খেলেছেন ধীরগতির এক ইনিংস। খানিক সময় নিয়ে আক্রমণাত্মক হতে চেয়েছিলেন। তবে সেখানেও বাধা হয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। ফাহিমার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। যাওয়ার আগে গার্ডনারের সঙ্গে গড়েছেন ২০ রানের জুটি। একটি চারের সাহায্যে ২৫ রানে ইনিংস খেলতে ৬৪ বল খেলেন মুনি। এরপর অ্যাশলে গার্ডনারের সাথে জুটি বাঁধেন ইনিংস সর্বোচ্চ রান করা সাদারল্যান্ড। দ্রুত রান তুলতে থাকেন দুইজনই। তাদের জুটি স্হায়ী হয় সাত ওভারের মতো। দু’জনের ৪৪ বলে ৩৪ রানের জুটি ভাঙে গার্ডনার নাহিদার বলে স্ট্যাম্পিং হলে। ৩৮ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ৩২ রান করেন গার্ডনার।
তবে একপ্রান্ত আগলে ছিলেন সাদারল্যান্ড। সপ্তম উইকেটে আরো একটি ছোট জুটি গড়েন সাদারল্যান্ড ও ওয়েরহাম। ইনিংসের ৪১তম ওভারে লেগ স্পিনার স্বর্ণা আক্তারের বলে ক্যাচ দিয়ে ওয়েরহাম ফিরলে ভাঙে তাদের ৩৪ রানের জুটি। এরপর অ্যালানা কিংকে নিয়ে এগোতে থাকেন সাদারল্যান্ড। অষ্টম উইকেটে উইকেটে ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৬ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তারা দুজন।
ইনিংসের প্রথম ছক্কা আসে অ্যালানা কিং এর ব্যাট থেকে। ইনিংসের শেষদিকে ফিফটি তুলে নেন সাদারল্যান্ড। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন অ্যালান কিং। পাঁচটি ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে যার চারটিই ইনিংসের শেষ ওভারে। অ্যালানার ব্যাট থেকে ৩১ বলে ঝড়ো ৪৬ রানের ইনিংস। ইনিংসের শেষ ওভারে ফাহিমা খাতুনের ওভার থেকে ২৯ রান সংগ্রহ করে অজিরা। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাঠ ছাড়েন সাদারল্যান্ড। তার ৭৬ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চারের মার।
টাইগ্রেস বোলারদের মধ্যে রাবেয়া খান বাদে উইকেট পেয়েছেন সবাই। দুই স্পিনার নাহিদা আক্তার ও সুলতানা খাতুন শিকার করেন দুইটি করে উইকেট। দারুণ কিপটে বোলিং করেন নাহিদা দশ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে নেন গার্ডনার ও ম্যাকগ্রার উইকেট। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন ফাহিমা খাতুন। এক উইকেট শিকার করলেও নয় ওভারে তিনি দেন ৬৭ রান।
/আরআইএম
Leave a reply