আশিক মাহমুদ:
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা তিন রাস্তার মোড়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির ঘটনার পরে এবার সামনে এসেছে ফুটপাত। সেখান থেকেও প্রতি মাসে চাঁদাবাজি হয় কয়েক কোটি টাকা। এছাড়া, কেউ যদি বাড়ি নির্মাণ করতে চান, সেক্ষেত্রেও চাঁদা দেয়া ছাড়া রেহাই নেই।
টাকা দিতে অপারগতা জানালে লেলিয়ে দেয়া হয় কিশোর গ্যাং। এসব নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েও যথাযথ প্রতিকার মেলে না। জানা গেছে, বর্তমানে মোহাম্মদপুরের অপরাধজগত নিয়ন্ত্রণ করে সন্ত্রাসী বাদল ও তার ভাই সুমন ওরফে ক্যাইল্যা সুমন।
ফুটপাতে চাঁদাবাজির বিষয়ে কথা হয় মামুন নামের এক যুবকের সাথে। মোহাম্মদপুরের বসিলা রোডের ফুটপাতে গত মাসে সবজির দোকান দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সেসময় তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে একটি চক্র। তবে, তাদের কথা না মেনে চাঁদা না দিয়ে সবজি ভ্যান বসায় মামুন। পরবর্তীতে মারধরেরও শিকার হন তিনি। ভেঙে ফেলা হয় তার দোকান, নষ্ট করে দেয়া হয় সব পণ্য।
মামুন বলেন, এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তবে, প্রতিকারের বদলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয় তাকে।
কথা হয় মোহাম্মদপুরের বসিলা মোড়ে বাবার সাথে ফলের ব্যবসা করা অন্য এক যুবকের সাথে। চাঁদার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসাই ছেড়ে দিতে হয়েছে তাকে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন: ঢাকার বসিলা মোড়ে চাঁদাবাজি: প্রতি মাসে তোলা হয় কয়েক কোটি টাকা
এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে সরেজমিনে যায় যমুনা টিভি। অবস্থান নেয় বসিলা রোডে। যমুনার ক্যামেরায় ধরা পড়ে ফুটপাতের প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা তোলার দৃশ্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি দোকান থেকে আড়াইশো টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয় প্রতিদিন। আর এগুলোর মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকেন নূর ইসলাম, সালাম, জসিম ও আলিসহ বেশ কয়েকজন। আর আড়ালে থেকে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করে বাদল ওরফে কিলার বাদল ও তার ভাই ক্যাইল্যা সুমন। সাথে রয়েছে লাল্লু, স্বপন, গ্যারেজ সোহেলসহ আরও কয়েকজন। তবে এ বিষয়ে ভয়ে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি কেউ।
পরে, ‘দোকান বসাতে চাই’ এমন পরিচয়ে কয়েকজনের সাথে আলাপ করে এই প্রতিবেদক। জানা যায়, সকালে দোকান বসালে দিতে হয় আড়াইশ টাকা। এছাড়া পুলিশকেও দিতে হয় ২০ টাকা। বলেন, এসব জায়গায় দোকান নিতে হলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এ সময়, পরিস্থিতি টের পেয়ে ইশারায় সবাইকে চুপ থাকার নির্দেশ দিয়ে যায় চাঁদাবাজরা।
এ বিষয়ে র্যাব-২’র অধিনায়ক মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, এদের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ দেয় না। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, স্থানীয় সন্ত্রাসী আর রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে এসব এলাকায় ব্যবহার করছে কিশোর গ্যাং সদস্যদের। এতে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে উঠতি বয়সীরা।
ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
/এমএইচ
Leave a reply