দুই হাতে অস্ত্র কিনছে সৌদি আরব। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে বিশ্বের দুই পরাশক্তির সাথে বড় ধরনের অস্ত্র আমদানি চুক্তি করলো দেশটি। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়া সফরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার ঘোষণা দেন।
তারপর দিন মার্কিন কংগ্রেস সৌদির কাছে আমেরিকার তৈরি ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড’ বিক্রির অনুমোদন দেয়। এর আর্থিক মূল্যমান ১৫ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র সৌদির দীর্ঘ দিনের মিত্র। কিন্তু আঞ্চলিক রাজনীতি আর ক্ষমতার লড়াইয়ে শুধু এই মিত্রের ওপর নির্ভর করতে পারছে না রিয়াদ। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের চিরশত্রু রাশিয়ার সাথেও হাত মেলাচ্ছে এখন। দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভেঙে গত সপ্তাহে কোনো সৌদি বাদশাহ ক্রেমলিন সফরে যান। উদ্দেশ্য অস্ত্র কেনা, সামরিক সম্পর্ক জোরদার করা।
রাশিয়া থেকে অবশ্য শুধু এস-৪০০ কিনেনি ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ট মিত্র রিয়াদ। ৩৬০টি ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ও সাতটি রাডারসহ আরও বহু অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে। রাশিয়া সফরে বাদশাহ সালমানের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল ক্রেমনলিনের সাথে মিলে নিজ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন একটি মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। সৌদি আরব পরিকল্পনা নিয়েছে দেশের ভেতরে একটি শক্তিশালী অস্ত্র শিল্প গড়ে তোলার। এর অংশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হবে, যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার লোক নিয়োগ দেবে সরকার। আর রাশিয়া এই অস্ত্র শিল্প গড়ে তুলতে সহায়তা করবে সৌদিকে।
২০১৭ সালটি ছিল সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনা বছরগুলোর একটি। গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রিয়াদ সফরের সময় ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি করেছিল। এর মাধ্যমে এফ১৬ বিমানসহ অত্যাধুনিক বহু অস্ত্র কেন হয়। শুধু তাই নয়, আগামী এক দশকে মোট ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রিয়াদকে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও করা হয় পেন্টাগনের পক্ষ থেকে। ইরানের পরমাণু অস্ত্রে সমৃদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষিতে ঘোর বিরোধী সৌদি মূলত অস্ত্রের কেনায় এত ঝুঁকেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের অস্ত্র আমদানি করা দেশগুলোর মধ্যে সৌদির অবস্থান দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে থাকা ভারতের চেয়ে পরিমাণে খুব পিছিয়ে নেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
শুধু আমেরিকা আর রাশিয়া নয়, যুক্তরাজ্য আর ফ্রান্সের অস্ত্রেরও অন্যতম বড় গ্রাহক সৌদি আরব। ২০১৫ সালে ফ্রান্সে কাছ থেকে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান কেনার জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল রিয়াদ।
Leave a reply