নূরনবী সরকার:
কেনার পর চার বছরে ৪০ দিনও চলেনি জলবায়ু বাস। সরকারের আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা বাস পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। ধুলো জমে গেছে আধুনিক নানা প্রযুক্তি সম্বলিত বাসটিতে। যেন দেখভালেরও নেই কেউ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু তহবিলের টাকা ব্যয়ে যে স্বচ্ছতা নেই, এর প্রমাণ এই বাস কেনা ও ফেলে রাখা। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু ইস্যুতে কীভাবে বাসটিকে ব্যবহার করা যায় তা নির্ধারণে কাজ চলছে।
জলবায়ু বাসটি ২০২০ সালে সরকারের জলবায়ু তহবিলের টাকায় কেনা হয়। এতে মোবাইল থ্রিডি, ইন্টারেকটিভ কিয়স্ক, সিনেমা সিস্টেম, সোলার প্যানেল, ওয়াইফাই রাউটার সুবিধা আছে। কথা ছিল, বাসের ডিজিটাল এলইডি পর্দায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ৪ বছর ধরেই এর ঠিকানা আগারগাঁও পরিবেশ অধিদফতরের পার্কিং জোন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ট্রাস্ট ফান্ডের যে তহবিল, সেটা নিয়ে তো অনেক কথাই আছে। আমি অতীতে যেতে চাই না। আমরা নতুন একটা নীতিমালা করেছি। নতুন নীতিমালার আলোকে এ ধরনের বিনিয়োগ বা কোনো কিছু কেনা হবে না।
উল্লেখ্য, যে প্রকল্পের অধীনে বাসটি কেনা হয়েছিল, সেটির মেয়াদও শেষ। নতুন প্রকল্প আসলে সচল হতে পারে বাসটি। এর সঠিক ব্যবহারের উপায় খোঁজা হচ্ছে।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের এমডিকে আমি বলেছি, এ নিয়ে তার প্রস্তাবনা কী আছে? মাঝে মধ্যে এটি ব্যবহার হয়, এমন না যে একেবারেই ব্যবহার হয় না। তবে এটিকে আরও কার্যকরভাবে আমরা কীভাবে ব্যবহার করতে পারি, সেটি হলো বিষয়। এটি কেবল বাস না, এর মধ্যে অনেক কিছু সংযোজন আছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেনার আগে সমীক্ষা না করার কারণেই বাসটির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। নেই বিকল্প ব্যবহারের নীতিমালা, নেই বাসের কার্যক্রম পরিচালনার জনবল। পুরো বিষয়টিকে জলবায়ুর অর্থ ব্যবহারে অদক্ষতা ও দুর্বলতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলছেন বিশ্লেষকরা।
জলবায়ু অর্থায়ন গবেষক ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন খান বলেন, বিভিন্ন ইয়ুথ সংগঠন পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে। কোনো একটা সংগঠনকে এটার দায়িত্ব দেয়া যায়। দরকার হলে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশীপ করা যায়। ট্রাস্ট ফান্ডের জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলো। এর একটা মূল্যায়ন হওয়া দরকার, কী হলো এই বরাদ্দ দিয়ে। আমরা মুখে বলছি, জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। কিন্তু বিভিন্ন বিভাগুলোর কর্মপরিকল্পনায় তা দেখছি না।
/এমএন
Leave a reply