কোন্দলে বিপর্যস্ত ঢাকা মহানগর বিএনপি

|

শরিফুল ইসলাম খান:

ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখা-ই গ্রুপিং-লবিং আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত। কমিটি গঠনে, মাঠ পর্যায়ে আছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। যদিও সভা-সমাবেশে মঞ্চ কাঁপানো বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতারা।

আদতে পারফরম্যান্স আসলে কেমন? দলটির থানা-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা অবশ্য তাদের খুব বেশি নম্বর দিতে চান না। প্রশ্ন তুলছেন, সঙ্কটে নগর নেতাদের ভূমিকা নিয়ে। সম্প্রতি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও বোঝা গেছে, মহানগর নেতৃত্বের কাছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তিতে ফারাক আছে।

ঢাকা মহানগরে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দাবি, ভোটে কমিটি হওয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নেই। এমনকি মহানগর বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, এ কথাও মানতে চান না তারা। বিপরীতে মাঠের নেতারা চান, নগরে এমন নেতৃত্ব আসুক, যারা প্রতিকূলতায় সাহস নিয়ে রাজপথে থাকবেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল ইসলাম বলেন, কর্মীদের খোঁজ সবসময় যিনি রাখবেন, পুরোদস্তর রাজনীতি করেন এবং সর্বোপরি এই সংগঠনকে যে লালন করে ও ভালোবাসে, আমাদের এখন এমন নেতৃত্ব দরকার। সাহসী নেতৃত্ব তো বটেই।

ঢাকা উত্তর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক শামসুল আলম বলেন, সব জায়গায় কমিটি ঠিকঠাক হয়নি, কোথাও কোথাও তো অসঙ্গতি আছে। এসব অসঙ্গতি দূর করতে পারলে আমাদের ঢাকা মহানগর বিএনপি অনেক শক্তিশালী হবে।

কমিটি গঠনে কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ মানতে রাজি নন নেতারা। শিকার করতে চান না আন্দোলনের ব্যর্থতা।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, এখানে অনিয়ম বা দুর্নীতির সুযোগ নাই। কারণ, ভোট ও জনমতের মাধ্যমে প্রত্যেকটা কমিটি করেছি। কমিটি বাণিজ্য করার একটা গ্রুপ ছিল। ওই সিন্ডিকেট আমরা ভেঙে দিয়েছি। ওই কারণে একটা গ্রুপ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, মহানগর বিএনপি দুর্বল তা না, আমরা শক্তিশালী। আমাদের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। এত নির্যাতনের পরে কীভাবে একটা লোক ও সংগঠন এদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।

২০১১ সালে খোকা-সালাম কমিটি ব্যর্থ হলে ’১৪ সালে ঢাকার দায়িত্ব দেয়া হয় আব্বাস-সোহেলের কাঁধে। ২০২১ সালে উত্তরে আমান-আমিনুল আর দক্ষিণে সালাম-মজনুকে দিয়ে মহানগর কমিটি করে বিএনপি। তারাও বদলাতে পারেনি ব্যর্থতার ইতিহাস।

দলীয় সূত্রের খবর, এক গ্রুপ নেতৃত্বে এলে নিস্ক্রিয় হয়ে যায় অন্য গ্রুপ। এমনকি চেষ্টা চলে চলতি কমিটিকে ব্যর্থ প্রমাণে। অবশ্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে মাইম্যান সৃষ্টির অভিযোগও পুরনো। গ্রুপিং আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বাদ পড়েন অনেক ত্যাগী কর্মী।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, পদ-পদবী নাই বা কমিটি থেকে বাদ পড়েছে এমন যারা ২৮ অক্টোবরের পর মাঠে ছিল, তাদেরকে মূল্যায়নের চেষ্টা করা হবে পূর্ণাঙ্গ বা আহবায়ক কমিটির সদস্য বর্ধিত করা হলে।

এদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বারবারই বলার চেষ্টা করেন, বড় দলে তীব্র প্রতিযোগিতা থাকে নেতৃত্বের জন্য। এক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের মতো শব্দগুলো ব্যবহার করতে চান না তারা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply