পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো প্রেমিকের চিঠি, কী লেখা ছিল?

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কিশোরগঞ্জ:

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স অর্থাৎ সিন্দুকে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্যলঙ্কারের সঙ্গে মিলেছে মনস্কামনা পূরণের অনেক চিঠি। দাম্পত্য বিরোধ, পারিবারিক কলহ, রোগ থেকে মুক্তিসহ বিভিন্ন চাহিদায় লেখা এসব চিঠির ভিড়ে আলোচনায় এসেছে এক প্রেমিক যুবকের আবদার।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের নয়টি দান সিন্দুক ও একটি ট্যাঙ্ক থেকে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। সঙ্গে মিলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট। তবে সবকিছুর মধ্যেও আলোচিত সেই চিঠি। যেখানে পারভীন আক্তার নামের এক মেয়েকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন সিলেটের হবিগঞ্জের সাইফুল ইসলাম নামের এক যুবক।

চিঠিতে লেখা ছিল, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি কিন্তু মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে না। আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যে আল্লাহ্ তাকে যেন আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করেন। মেয়েটার নাম মোছা. পারভীন আক্তার ও আমার নাম সাইফুল ইসলাম। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে কবুল করেন।

এর আগে, ২০২২ সালের ১ অক্টোবর এক মা, প্রতিবন্ধী মেয়ের সুস্থতা কামনা করে মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি লিখেছিলেন।সন্তানের সুস্থতা চেয়ে চিঠিতে মা লিখেছিলেন, হে পাগলা বাবার মসজিদে আর্জি দিচ্ছি যে, আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী। আপনার উছিলায় যাতে আমার মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া ভাল হয়ে যায়। আমি আপনার দরবারে একটি ছাগল দিব। আমার আর্জি কবুল করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চিঠিতে পাওয়া যায়, দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পাওয়ার নানারকম আকুতি। এর আগে, ২০২২ সালে ১ অক্টোবর এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চিঠি পাওয়া গিয়েছিল সেখানে। চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার প্রবণতার হাত থেকে বাঁচতে ওই শিক্ষার্থীর চিঠিতে লেখা ছিল, আমাকে বাঁচাও আত্মহত্যার হাত থেকে। আমি বাঁচতে চাই, আর নিতে পারছি না বেকারত্বের বোঝা। সবার খোঁচা দেওয়া কথা। একটা চাকরি হলে হয়তো বেঁচে যেতাম।

কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদটির নয়টি লোহার দান সিন্দুক আছে। প্রতি তিন মাস পর পর দান সিন্দুক খোলা হয়। এবার চার মাস ১০ দিন পর দান সিন্দুক খোলা হয়েছে। এতে  মিললো রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার। এছাড়া রয়েছে মনোবাসনা পূর্ণ করার এমনসব চিরকুট।

উল্লেখ্য, মনোবাসনা পূরণের জন্য পাগলা মসজিদের দানবাক্সে হিন্দু -মুসলিম ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ দান ও মানৎ করে থাকেন। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে খোলা হয় দানবাক্সগুলো।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply