এটা জনগণের প্রাথমিক বিজয়: সুলতান মনসুর

|

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর বলেছেন, সরকার কর্তৃক বিরোধী জোটের সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেয়ার বিষয়টিকে জনগণের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে জনগণের ভোট নিশ্চিত করতে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে এটা প্রাথমিক বিজয়।

যমুনা টেলিভিশনের প্রতিদিনের টকশো ‘রাজনীতি’তে অংশ নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, প্রথমে সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের দেয়া সংলাপের চিঠি গ্রহণ করা এবং সে অনুযায়ী সংলাপে বসতে রাজি হয়েছেন। আশা করি আমাদের ঘোষিত ৭ দফার আলোকেই আলোচনা হবে। আমরা মূলত চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন। আগামী দিনে যাতে মানুষ ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ নীতির ভিত্তিতে নিজেদের ভোটের প্রতিফলন দেখতে পারে। এরকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি হতে হবে।

সুলতান মনসুর বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপে বসতে চাওয়ার বিষয়টিকে আমরা এটাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছি। এটা হচ্ছে নির্বাচনে ভোটের প্রতিফলন নিশ্চিত করার পথে জনগণের প্রাথমিক বিজয়।

ঐক্যফ্রন্টের একাধিক দাবি মানতে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। সেটা এখন সম্ভব কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতান মনসুর বলেন, সংবিধান তো কোরআন নয় যে, পরিবর্তন করা যাবেনা। এটা গণতন্ত্রের বিষয়, আদর্শের বিষয়, সরকারের মানসিকতার ব্যাপার। আমরা চাচ্ছি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসুক, সেটা যে দলই হোক না কেন! ২০১৪ সালে সার্কাস মার্কা নির্বাচন হয়েছে, তেমনটি আর চাই না।

সুলতান মুনসুর বলেন, অতীতে রাজনৈতিক সংকটে সংলাপ হয়েছে, মান্নান ভূঁইয়া আব্দুল জলিলের সংলাপ হয়েছে কিন্তু তা সফল হয়নি। আমরা সেরকম সংলাপ চাই না। আন্তরিকতার সংলাপ চাই। আমরা সফল সংলাপের আশা করছি, সরকারের সাথে প্রথম বৈঠকে আমরা সংলাপের গতিবিধি বুঝতে পারবো। সরকার সোজা পথে হাটলে আমরাও সোজা পথে হাঁটবো। উনারা বাঁকা পথে হাঁটলে আমরা আমাদের মতো হাঁটবো। সরকারের মনোভাবের উপর সবকিছু নির্ভর করবে। তিনি বলেন, সরকার আন্তরিকতা দেখালে আমরা আন্দোলন স্থগিতের কথা ভেবে দেখবো।

আপনার তো কোনো দল নেই। আপনার মতো যারা ব্যক্তি হিসেবে ঐক্যফ্রন্টে আছেন, জোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আপনাদের কোনো প্রভাব থাকে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতান মনসুর বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কমী। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করি। আমি একজন আওয়ামী লীগার হিসেবেই ঐক্যফ্রন্টে আছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নেই।

অনুষ্ঠানটিতে আরও অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ এবং সদ্য বিকল্পধারায় যোগ দেয়া সাবেক বিএনপি নেতা শমশের মবিন চৌধুরী।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুই দলের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ উত্তপ্ত কথাবার্তার পর হঠাৎ সংলাপের ঘোষণায় আমি কিছুটা অবাক হয়েছি। তবে এটা ইতিবাচক বিষয়। আশা করছি ভালো কিছু ফল আসবে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯০ সালে বড় দলগুলো নিয়ে তিনদলীয় ঐক্যজোট গঠন হয়েছিল, কিন্তু পারস্পরিক বিশ্বস্ততায় শেষ পর্যন্ত তা টেকেনি। দলগুলোর মাঝে জাতীয় সনদের মতো জনগণের নীতিমালার একটা সুরক্ষা দরকার। সরকার ও বিরোধীদল সকলেই সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ড কামাল হোসেনের কারণে ঐক্যফ্রন্টের গুরুত্ব বেড়েছে। এই সংলাপ ব্যর্থ হলে দেশ অন্ধকারে যেতে পারে।

সাবেক বিএনপি নেতা এবং বর্তমানে বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমশের মবিন চোধুরী বলেন, আমি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। ৭ দফা দাবিগুলো মানা সম্ভব, কেননা এগুলো জনগনের দাবি। নির্বাচনকালীন সরকার হতে হবে গ্রহনযোগ্য। সরকারি দলের অধীনে নির্বাচন হলে গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের হাতে ক্ষমতা থাকলেও সরকারের কারণে তা পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারে না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক এটা জনগণের দাবি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply