সহকর্মী হাসনাইনের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ, বাউফলে বিদ্যুৎ কর্মীদের আন্দোলন

|

বাউফল করেসপনডেন্ট:

পটুয়াখালীর বাউফলে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ দেয়ার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইন ক্রু (লেভেল-১) মোহাম্মদ হাসনাইন (২২) নিহতের ঘটনায় তার সহকর্মীদের আন্দোলনের সময় বেড়েছে আরও একদিন। তার মৃত্যুর পর, এ দুর্ঘটনায় অফিস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের লাইন ক্রু’রা।

প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৪ জুন) একদিনের কর্মবিরতী ঘোষণা দিয়ে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে নিহতের সহকর্মীরা। এর আগে, গত সোমবার উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরনিমদী এলাকায় একটি বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করার সময় মৃত্যু হয় হাসনাইনের।

সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন জোনাল অফিসের দেড় শতাধিক চুক্তিভিত্তিক লাইন ক্রু (লেভেল-১) আন্দোলনে অংশ নেয়। সন্ধ্যা ৬টায় আন্দোলনের সমাপ্তিকালে আরও একদিন কর্মবিরতী ঘোষণা দিয়ে বুধবার সারাদিন অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয় তারা।

নিহত মোহাম্মদ হাসনাইন ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চালিতাতলী গ্রামের মো. জামাল হোসেনের ছেলে। প্রায় ১৫ মাস আগে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের জুনিয়র লাইন ক্রু (লেভেল-১) হিসেবে যোগদান করেন তিনি।

আন্দোলনকারীরা জানান, নিয়মানুযায়ী বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ কাজ করার সময় একজন সিনিয়র টেকনিশিয়ান, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার অথবা সিনিয়র লাইন ক্রু’র তত্ত্বাবধানে জুনিয়র লাইন ক্রু লেভেল-১ কাজ করবে। কিন্তু সবক্ষেত্রে সিনিয়র সহকর্মী ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য করা হয় তাদের। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হওয়ায় চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অতিরিক্ত কাজ করালেও চাকরি হারানোর ভয়ে নিশ্চুপ থাকে তারা।

এর আগেও, অফিস কর্মকর্তাদের চাপে অভিজ্ঞ সিনিয়র লাইন ক্রু ছাড়া সংযোগ কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে তাদেরই ১৮ জন সহকর্মী। সবশেষ গত পরশু প্রাণ হারালেন আরেক সহকর্মী হাসনাইন।

এ ঘটনায় যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানায় তারা। এছাড়াও তাদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো বন্ধ করাসহ জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনের বিষয়ে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মজিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠালেও যোগাযোগ করেননি তিনি।

বাউফল জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী গগন সাহা বলেন, বিদ্যুতের খুটিতে উঠে সংযোগ প্রদানের সময় অসাবধানতার কারণে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হন। এখানে অফিসারদের কোনো গাফিলতি নেই। চন্দ্রদ্বীপ অভিযোগ কেন্দ্রের সিনিয়র টেকনিশিয়ান ছুটিতে ছিলেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সর্বশেষ লাইন ক্রু লেভেল-১ নিয়োগ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। ২০১৯ সাল থেকে এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে আসছে সংস্থাটি।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply