তাহমিদ অমিত
প্রত্যাবর্তন রাঙাতে তার থেকে ভালো আর কে পারেন? ঢাক-ঢোল নয়, পারফরম্যান্সই যেনো বলে– ‘আমি এসেছি ফিরে!’ ইতিহাসও তাই বলে, যখনই ফিরেছেন, এসেছেন বীরের বেশে। যেনো আধাঁর রাত্রি শেষে ভোরের সূর্য হাসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বাজে সময়ের ঘূর্ণিপাকে যেন আটকা পড়েছিলেন সাকিব। কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিলো না। ব্যাটটা মোটেও কথা শুনছিলো না। টি-টোয়েন্টিতে শেষ কবে ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছিলেন, তাও যেন ভুলতে বসেছিলেন।
মাঠের বাইরে তাই কানাঘুষা। তীরের মতো বেয়ে আসছিল সমালোচনা। কতো বিদ্রুপ, কতো টিপ্পনী, কতো জনের কতো কথা! অনেকের চোখে তো তিনি ফুরিয়ে আসছিলেন। সাবেক ভারতীয় ব্যাটার বীরেন্দর শেবাগ তো লজ্জায় তাকে অবসর নিতেও বলে দিলেন।
কথাগুলো নিশ্চয়ই তার কানেও পৌঁছেছিলো। প্রবল জেদকে হয়তো মনের মাঝে পুষে রেখেছিলেন। কে না জানে, চ্যালেঞ্জ নেয়া সাকিব বরাবরই ভয়ংকর। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না।
সফলতার থেকে বড় প্রতিশোধ আর কী হতে পারে? সাকিব আল হাসানও হয়তো তা ভেবেই শান্ত রেখেছিলেন নিজেকে। সব সমালোচনার জবাব যেনো ব্যাট হাতেই দিলেন সাকিব। এবারও সাকিব ফিরলেন তেমন করে, সেই রাজকীয় ভঙিতে। দলের হয়ে বিশ্বকাপের প্রথম ফিফটিটা আসলো তার ব্যাটে। ৩৮ বলে পৌঁছেছেন এই মাইলফলকে। ১৯ ইনিংসের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন সাকিব।
শেষ পর্যন্ত সাকিব অপরাজিত ছিলেন ৪৬ বলে ৬৪ রানে। সেই সাথে দলকে এনে দিয়েছেন এবারের আসরে সর্বোচ্চ পুঁজি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২৫ রানের এই জয় এখন সুপার এইটের সুবাস দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন সেই ২০২১ সালে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এই ম্যাচজয়ী ইনিংসের পর সাকিব আবারও হলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। সাকিবের ক্যারিয়ারে ২৮তমবার। স্পর্শ করলেন অজি কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে।
অবাক হওয়ার কী আছে? সাকিব তো এমনই। এমনটা তো স্রেফ সাকিবকেই মানায়। চ্যালেঞ্জ দিয়ে তাকে আটকাবেন কোন বাধায়? এখানেই তো সাকিবের ভিন্নতা! এজন্যই তো তিনি সেরা, বিশ্বসেরা!
/এএম
Leave a reply