সিনিয়র করেসপনডেন্ট, রংপুর:
ছাত্র-জনতা ও বিএনপি নেতার পাল্টাপাল্টি মামলা ও কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুরের পীরগাছা এলাকা। এবার উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিবে পীরগাছা বাজার দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতি।
বাজার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে পুরো এলাকায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) স্মারকলিপি প্রদানের জন্য সকালে দোকান বন্ধ থাকবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে দুপুরে দোকান খোলা হবে। তবে ব্যবসায়ী সমিতি হরতালের ডাক দিয়েছে এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যা সত্য নয়।
এর আগে, গত ৬ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২২ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দায়ের করেন আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা। মামলার এজহারে তিনি দাবি করেন, গত ৫ আগস্ট বিকেলে ‘দেশ স্বাধীনের নামে’ ছাত্র-জনতা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পীরগাছা বাজার দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ের তালা ভাঙে। পরে ১৫ হাজার টাকার কাচের গ্লাস, টেবিল, ৩৫ হাজার টাকার ৪০টি চেয়ার, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ৩২টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। মামলায় রব্বানি ওরফে বাবু, শামিম মিয়া, অন্ত মিয়া, শাকিল মিয়া, জুয়েল মিয়া, শাহিন মিয়াসহ ২২ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে বাঁচাতে এই মামলা করে তিনি ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। পরে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতেই আমিরুল ইসলাম রাঙ্গাকে প্রধান আসামি এবং অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে উল্লেখ করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক একরামুল হক। মামলার এজাহারে বলা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলনের ব্যক্তিগত এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস বাচাতে গত পাঁচ আগস্ট বিজয় দিবসের মিছিলে সরাসরি গুলি করে আমিরুল ইসলাম রাঙ্গা। এছাড়াও বিভিন্ন বেশি অস্ত্র দিয়ে বিজয় মিছিলে হামলা চালানো হয়। মামলার প্রতিবাদে শনিবার থানার সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
তাদের দাবি, গত ৫ আগস্ট পীরগাছায় কোনো ভাঙচুর হয়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন রাঙ্গার আত্মীয়। এখনও তিনি ওই বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আর তাই গত ৫ আগস্ট উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মিলনের ব্যক্তিগত অফিস রক্ষা করতে গিয়ে রাঙ্গা ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। এতে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয় বলেও অভিযোগ তাদের।
দুইটি মামলা ও এলাকায় মাইকিং করার বিষয়টি নিশ্চিত করে পীরগাছা থানার ওসি ওসি সুশান্ত কুমার সরকার জানান, দুইটি মামলারই তদন্ত চলছে। তবে এ বিষয়ে একাধিকবার আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানান, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর বিএনপি’র কোন নেতাকর্মী এর বিরুদ্ধে গেলে কিংবা কোনো অপকর্মে জড়ালে এর দায় নেবে না বিএনপি। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
/এএস
Leave a reply