ভারত সফরকারী দেশগুলোর মধ্যে একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী স্পিন অ্যাটাক বাংলাদেশের

|

ছবি: সংগৃহীত

ভারত সফরকারী দেশগুলোর মধ্যে একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী স্পিন অ্যাটাক বাংলাদেশের। এমন দাবি উইজডেন ক্রিকেটের। ভারত সফরে বাংলাদেশের স্পিনের চার তুরুপের তাস সাকিব, মিরাজ, তাইজুল ও নাইম হাসান। ২১ শতাব্দীতে এমন কোয়ালিটি স্পিন আক্রমণ নিয়ে ভারত সফর করেনি আর কোনো দল । এর আগে ২০০৯/১০ মৌসুমে শ্রীলঙ্কান স্পিন অ্যাটাক ছিলো সর্বেসর্বা। যার নেতৃত্বে ছিলেন মুত্তিয়া মুরালিধরণ।

বাংলাদেশের বর্তমান স্পিন অ্যাটাক একবিংশ শতাব্দীতে ভারত সফর করা স্পিন অ্যাটাকের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা। এর আগেও দুবার শক্তিশালী স্পিন নির্ভর দল নিয়ে ভারত সফর করেছে বাংলাদেশ তবে ২০১৯/২০ সফরে দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান ছিলেন অনুপস্থিত।

টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকায় সবার শীর্ষে সাকিব। ৩১.৩১ গড়ে ২৪২ উইকেট তার। একবিংশ শতাব্দীতে ভারত সফর করা স্পিনারদের মধ্যে অন্যতম সেরা সাকিব। পিছিয়ে নেই তাইজুল ইসলাম কিংবা মেহেদী হাসান মিরাজও। ৩১.৯২ গড়ে তাইজুলের উইকেট ১৯২। ৩২.৭২ গড়ে মিরাজের উইকেট ১৭৪।

নাইম হাসান টেস্ট ক্যাপ পান ২০১৮-১৯ মৌসুমে। ক্যারাবীয়ানদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো বোলিং করে ৬১ রানে নেন ৫ উইকেটে। ছয় বছরে নাঈম খেলেছেন মাত্র ১০ টেস্ট। ২৭.৪৭ গড়ে নিয়েছেন ৩৬ উইকেট, ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার। পরিসংখ্যান বিচারে সংখ্যাটা আকর্ষনীয়। তবে তার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে সাকিব, তাইজুল, মেহেদী মিরাজরা।

বর্তমান বাংলাদেশের স্পিন অ্যাটাক ২০০৯/১০ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার স্পিন আক্রমণ থেকে পিছিয়ে থাকলেও যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ। শ্রীলঙ্কার সেই দলের ৮৫০ উইকেটের মাঝে ৭৮৩ উইকেটের মালিক ছিলেন মুরালি।

এই শতাব্দীতে ভারত সফর করা দল গুলোর মাঝে মাত্র ৭ দলের স্পিনাররা সাকিবের চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন। মুরালিধরন এবং শেন ওয়ার্ন এই তালিকায় আছেন দুইবার, নাথান লায়ন, রঙ্গনা হেরাথ এবং ড্যানিয়েল ভেট্টোরি একবার করে।

২০০৪/০৫ সিরিজে ওয়ার্নকে যোগ্য সাপোর্ট দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী পেস আক্রমণ। যদিও ২০২২/২৩ মৌসুমে নাথান লায়ন ব্যতীত উপরের তালিকার আর কেউ পেসারদের থেকে পাননি যথাযথ সহযোগিতা ।

ভারতীয় দলে সর্বদা ২ জন স্পেশাল স্পিন আক্রমণের দেখা মেলে। সফরকারী দলগুলোর জন্য অন্যতম বাঁধা হয়ে দাড়ায় এই স্পিন ডুয়ো। ভারতের মাটিতে সফরকারী দলগুলো সবসময় দু’জন মানসম্মত স্পিনারের অভাব বোধ করে।

২০০৪/০৫ সালে ২-১ এ সিরিজ জেতে অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার পর ২০১২/১৩ সালে ইংল্যান্ড একমাত্র দল যারা ভারতকে তাদের মাটিতে হারাতে সক্ষম হয়। সেবছর মন্টে পানেসার ও গ্রায়েম সোয়ান ভারতকে কিছুটা চ্যালেঞ্জ জানায়।

তাইজুল টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অস্ত্র। উইকেটের দিক থেকে তাইজুল কিছুটা এগিয়ে থাকলেও অলরাউন্ড পারফর্ম্যান্সে এগিয়ে থাকায় সাকিবের পর দলের দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে এগিয়ে থাকবে মিরাজ। ভারতের পিচগুলি পাকিস্তানের সারফেস থেকে আলাদা হওয়ার বাংলাদেশের তিন স্পিনার খেলার সম্ভাবনা প্রবল। তৃতীয় স্পিনার হিসেবে সুযোগ পেতে পারেন ডানহাতি নাঈম ইসলামও।

সব কিছু মিলিয়ে নিঃসন্দেহে বলা যায় বাংলাদেশ যদি এক স্পিনার খেলায় তবে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে অভিজ্ঞ স্পিনার থাকবে লাল-সবুজদের। যদি তারা ২ স্পিনার খেলায়, তবে ২১ শতাব্দীতে ভারত সফরের সেরা স্পিন জুটি হবে বাংলাদেশের এবং যদি তিন স্পিনার কম্বিনেশন বেছে নেয় তবে এটি হবে গেল দুই দশকে ভারত সফর করা সেরা স্পিন আক্রমণ। উল্লেখ্য পাকিস্তান সফরে ৩৬ উইকেটের মধ্যে ২১টিই ছিল বাংলাদেশ পেসারদের।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply