প্রতীকী ছবি
সিনিয়র করেসপনডেন্ট, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় স্বামীর দেয়া আগুনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী ও শ্যালকের মৃত্যুর পর মারা গেলেন শ্বাশুড়ি। এ নিয়ে দগ্ধ তিনজনেরই মৃত্যু হলো। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চাচি শ্বাশুড়ি শিরীন আক্তার।
এর আগে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মারা যান স্ত্রী শারমিন আক্তার এবং তার চাচাতো ভাই রুবেল।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গালা গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের মেয়ে শারমিন আক্তারের সাথে ঢাকার ধামারাই উপজেলার রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর সাথে ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৯ বছরের রোহান নামের এক ছেলে আছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী তাকে অমানবিক নির্যাতন করতো।
গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) শারমিন আক্তার বাবার বাড়ি এসে স্বামী হাসান আলীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ খবর শুনে পরদিন শুক্রবার সকালে হাসান শ্বশুরবাড়ি আসেন। স্বামী আসার খবর শুনে শারমিন তার চাচার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ সময় হাসান চাচা শ্বশুরের বাড়ির বাথরুমের ওপর দিয়ে রুমের ফলস সিলিং ভেঙে রুমে প্রবেশ করে। পরে তিনি পেট্রোল দিয়ে শারমিনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় শারমিনকে বাঁচাতে এসে চাচি শিরীন আক্তার ও চাচাতো ভাই রুবেলের শরীরেও আগুন লেগে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠায়।
সাটুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন পিন্টু বলেন, ওই দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেবে শুনে স্বামী হাসান আলী গায়ে পেট্রোল দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার শারমিন ও রুবেল মারা যায়। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে শারমিনের চাচি শিরীন আক্তারও মারা যায়। এ ঘটনায় তিনজনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, ঘটনার পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিহত শারমিনের ভাই শামীম বাদি হয়ে হাসান আলীকে আসামি করে সাটুরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ হাসান আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
/এনকে
Leave a reply