পলিথিনের ছাপরা ঘরে ১১ সদস্যের ভূমিহীন পরিবারের বসবাস

|

রইসুল ইসলাম ইমন, বাউফল:

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার পারভীন বেগম। পেশায় একজন গৃহকর্মী। ১১ সদস্যদের পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন একটি পলিথিনের ছাপরা ঘরে।

নাজিরপুর ইউনিয়নের ধানদী গ্রামে তেতুঁলিয়া নদীর পারে পানির ডোবার মধ্যে, কাঠের পাটাতনের ওপরে গোগল পাতার বেড়া ও পলিথিনের ছাপরা দিয়ে ঘর বেধে সেখানেই বসবাস তাদের। এমনকি মাত্র একটি ছেড়া কাঁথা গায়ে রাত কাটায় তার পরিবারের সকল সদস্য।

একসময় জমি ও ঘর-বাড়ি সবই ছিলো এই পরিবারের। তেঁতুলিয়া নদীর আগ্রাসী ভাঙনে সেই জমি ও ঘর বিলীন হয়ে যায়।

নদীর পারে দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় নিজের সেই পূর্বের বসত ঘরের স্থান দেখান পারভীন বেগম৷ চোখ বেয়ে বেয়ে পড়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু। এখন সেখানে শুধু অথৈ জল। নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করে তার জমির ওপর দিয়ে। তার অসহায়ত্ব ও দুর্দিনের এই মানবেতর জীবন যেকোনো মানুষের অন্তর ছুঁয়ে যায়।

পারভীন বেগমের স্বামী বজলু হাওলাদার জানান,  চার বছর আগে তেতুঁলিয়ার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় তাদের ত্রিশ শতক কৃষি জমি ও ঘর-বাড়ি। তিন সন্তান ও নাতি-নাতনী নিয়ে অসহায়ত্বের অথৈ সাগরে পড়ে যায় তাদের জীবন।

তিনি জানান, তারা চর রায়সাহেব আদর্শ গ্রামে একটি থাকার ঘর পেয়েছিলো। কিন্তু সেখানে ছিলো কাজের সংকট। দুই মাসে কাজ না মিললে আদর্শ গ্রাম ছেড়ে নিজ গ্রামে আসতে বাধ্য হন তার। পরে রাস্তার পাশে পলিথিনের ছাপড়া ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করে এই পরিবার।

এ প্রসঙ্গে স্পিড ট্রাস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী সালমা বেগম বলেন, স্টার ফর হারল্যান্ড ক্যাম্পেইন প্রকল্পের ভূমিহীন দলের একজন সদস্য পারভীন বেগম। স্থানীয় চেয়ারম্যান মাধ্যমে ভূমিহীন সনদ পেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ডের সচেতনতা মূলক সভায় খাসজমি বন্দোবস্তের দাবিও তোলা হয়েছিলো।

সভার প্রধান অতিথি এসিল্যান্ড প্রতীক কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, বর্তমানে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান বন্ধ আছে। উপজেলা ও জেলা খাসজমি বন্দোবস্ত কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ  ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানায় স্পিড স্ট্রাস্টের সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, পারভীন বেগম ও বজলু হাওলাদারের পরিবারের ১১ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৪ জন উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মধ্যে তিনি গৃহকর্মীর কাজ করেন। বাকিরা দিনমজুরের কাজ করেন।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply