পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে হেরে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি ইংলিশদের জন্য ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। এই ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড। হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৪৬ রানের জয় পায় স্বাগতিকরা। ফলে টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের পর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জয়রথ থামলো।
স্টিভেন স্মিথের ফিফটির পর মাঝপথে খেই হারানো অস্ট্রেলিয়া ৩০৪ রান করে অ্যালেক্স কেয়ারির সৌজন্যে। আগের ম্যাচে দারুণ ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হওয়া উউকেটকিপার-ব্যাটসম্যান এ দিন করেন ৬৫ বলে অপরাজিত ৭৭। রান তাড়ায় ইংল্যান্ড ৩৭.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৪ রান তোলার পর বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে তখন অনেক এগিয়ে ইংলিশরা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চেষ্টার লি স্ট্রিট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ব্রুক। আগে ব্যাট করতে নেমে ম্যাথু শর্ট একটি করে চার ও ছক্কা মেরে ১২ রানেই আউট হয়ে যান। আরেক ওপেনার অধিনায়ক মার্শ ফেরেন ২৪ রানে।
এরপর স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরন গ্রিন জুটি বেধে দলকে টেনে নেন অনেকটা। তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রান যোগ করেন দু’জন। এই জুটি ভাঙার পর অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসের ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ৪২ রান করা গ্রিনকে ফেরান জেকব বেথেল। পরের ওভারেই মানার্স লাবুশেন ফেরেন কোনো রান না করে।
৮২ বলে ৬০ রান করে স্মিথ যখন আউট হন, ৩৫তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৫ উইকেটে ১৭২। সেখান থেকে তারা ঘুরে দাঁড়ায় পরের সময়টায়। কেয়ারি এক প্রান্তে দারুণ খেলতে থাকেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল স্বভাবজাত ব্যাটিংয়ে ২৫ বলে করেন ৩০। শেষ সময়ে অ্যারন হার্ডি করেন ২৬ বলে ৪৪। ৪৮ বলে ফিফটি করা কেয়ারিও শেষ সময়ে দ্রুত রান তোলেন আরও। শেষ ১০ ওভারে ১০৪ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। এতে অজিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৩০৪ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি উইকেট নেন ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার।
জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে এদিনও ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার ব্যর্থ হন। মাত্র ১১ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা। তারপর উইল জ্যাকস এবং হ্যারি ব্রুক খেলা ধরে নেন। ৮২ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন উইল জ্যাকস, মারেন নয়টি চার এবং একটি ছয়। ৯৪ বলে ১১০ রানের ইনিংস খেলেন সদ্য ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব পাওয়া হ্যারি ব্রুক।
চোটে পড়া জস বাটলারের জায়গায় অধিনায়কত্ব করা ব্রুক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি করেই একটি রেকর্ড গড়েছেন। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ড সেটি। ২৫ বছর ২১৫ দিন বয়সী ব্রুক ভেঙেছেন অ্যালিস্টার কুকের রেকর্ড (২৬ বছর ১৯০ দিন)।
ম্যাচের শেষ পর্যন্ত তিনি লিয়াম লিভিংস্টোনকে সঙ্গে করে অপরাজিত ছিলেন। লিয়াম লিভিংস্টোন করেন ২০ বলে ৩৩ রান। বৃষ্টি বাগড়া দেয়ার ম্যাচে সেই সুবাদেই ডিএলএস মেথডে ৪৬ রানে জিতে যায় ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ড জিতলেও সিরিজে এই মূহূর্তে ২-১ এগিয়ে রয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচে জয় পাওয়ায় মোমেন্টাম পেয়েছে ইংলিশরা। তারা অন্তত পরের ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরাতে চাইবে। এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ ব্যবধানে শেষ হয়েছিল।সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডে শুক্রবার লর্ডসে।
/আরআইএম/এমএন
Leave a reply