এপ্রিল-জুনে কোটি টাকার বেশি হিসাবধারী অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার

|

প্রতীকী ছবি।

দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা রয়েছে, এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। চলতি বছরের জুনের প্রান্তিক শেষে কোটি টাকার বেশি রয়েছে এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একাউন্টের সংখ্যা দাড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। যা আগের প্রান্তিক মার্চে ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি। অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে কোটি টাকার বেশি হিসাবের (একাউন্ট) সংখ্যা বেড়েছে দুই হাজার ৮৯৪টি। বিশেষ করে আর্থিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও এই সংখ্যা বেড়েছে।

 বাংলাদেশ ব্যাংকের শিডিউলড ব্যাংকস স্ট্যাটিসটিক্স শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পিষ্ট। সাধারণ মানুষ সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এতে টাকা জমানোর চেয়ে অনেকে জমানো অর্থ খরচ করছেন। এমন পরিস্থিতিতেও একটি শ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী বা বড় প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৩। এসব হিসাবে জমা রয়েছে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। এসব হিসাবে সাত লাখ ৭৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা জমা রয়েছে। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৪২.০৫ শতাংশই কোটির টাকার এসব হিসাবধারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি। ওইসব ব্যাংক হিসাবে ৭ লাখ ৪০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা জমা ছিল। তাছাড়া, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮ টি। এসব একাউন্টে মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ, এই তালিকায় ব্যক্তি ছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল পাঁচ জন। এরপর কোটির টাকার বেশি রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে। যা ১৯৭৫ সালে ৪৭, ১৯৮০ সালে ৯৮, ১৯৯০ সালে ৯৪৩, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ এবং ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩টিতে দাঁড়ায়।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে তা দাঁড়ায় এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ নয় হাজার ৯৪৬টি।

/আরএইচ/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply