বাউফলে মানবাধিকারকর্মী পরিচয়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড

|

বাউফল করেসপনডেন্ট:

পটুয়াখালীর বাউফলে এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড সোসাল ওয়েলফেয়ার এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা নামক একটি সংগঠনের সদস্য সচিব পরিচয় ব্যবহার করে নিম্নশ্রেণীর প্রান্তিক মানুষের সাথে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মো. শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এ সময় জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে পারিবারিক ঝামেলা আরও বেড়ে যায়। এই সুযোগ কাজে লাগায় অভিযুক্ত এই মানবাধিকারকর্মী। এক্ষেত্রে তিনি টার্গেট করেন নিম্নশ্রেণীর প্রান্তিক মানুষকে। এলাকায় একটি ৩ তলা ভবনসহ ২টি বাড়ি নির্মাণ করেছেন অভিযুক্ত এই মানবাধিকারকর্মী।

রাবেয়া বেগম নামের ভুক্তভোগী এক বিধবা নারী বলেন, ২০বছর যাবত ভাসুর হালিম মৃধার সাথে যৌথ ঘরে বসবাস করতেন তিনি ও তার স্বামী মৃত. হারুন মৃধা। তার স্বামীর মৃত্যুর পরে ভাসুরের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধের সৃষ্টি হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে তাকে মারধর করে বাড়িছাড়া করেন হালিম মৃধাসহ তার স্বজনরা। পরে তিনি বাউফল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ১৩ সেপ্টেম্বর বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরমধ্যে মানবাধিকারকর্মী পরিচয়ে তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন শহিদুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি। তবে এখন উল্টো তাকে বিরোধপূর্ণ ঘরের ভিতর থেকে মালামাল সরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে ওই মানবাধিকারকর্মী।

ভুক্তভোগী নয়ন নামের একজন বলেন, জমি কিনে দেয়ার কথা বলে,তার কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন শহিদুল।

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ওই মহিলাকে এ ধরনের কথা বলেননি। সংস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে নিজের সংস্থার নামও উচ্চারণও করতে পারেননি এই ব্যক্তি। বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি কেন্দ্রীয় মহাসচিবের নাম্বার দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

সংস্থাটির কেন্দ্রীয় মহাসচিব দাবি করা শহীদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ১৯৯৮ সালে তারা সমাজসেবা অধিদফতর থেকে নিবন্ধন পেয়েছেন। তাদের ফান্ড নেই, তাই বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিস ট্রাস্ট এর মাধ্যমে অসহায় মানুষকে আইনী সহায়তা দিয়ে থাকেন তারা।

বাউফলের সদস্য সচিব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেন্দ্রীয় এই মহাসচিবকে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা ও তাদের সম্পর্ক বিষয় প্রশ্ন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান তিনি।

এসব সংস্থা প্রসঙ্গে ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী শাওনুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, সারাদেশে প্রচুর মানবাধিকার সংস্থার সাইনবোর্ড দেখা যায়। সমাজসেবা অধিদফতর থেকে একটি নিবন্ধন সনদ নিয়েই মানবাধিকার সংস্থা খুলে বসছেন এরা।

এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তির বিষয় খোঁজ খবর নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড সোসাল ওয়েলফেয়ার এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা নামক সংস্থা দুটির কর্মীদের ভিজিটিং কার্ড অনুযায়ী তাদের রেজিষ্ট্রেশন নং যথাক্রমে, ঢা- ০৪৫৮০ এবং ঢা- ০২৯৯৬। তবে অনলাইনে ও বিভিন্ন সূত্রে অনুসন্ধান করে তাদের কোনো ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের অফিসের কোনো বিস্তারিত ঠিকানাও পাওয়া যায়নি।

/এএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply