লালমনিরহাটে কৃষকের ক্ষেতের ধান অবৈধভাবে কেটে নেয়ায় মামলা, গ্রেফতার ১

|

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ৬৯ শতক জমির পাকা ধান অবৈধভাবে কেটে নেয়ায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) হাতীবান্ধা থানায় মো. শাহজামাল হক বাদি হয়ে মামলাটি করেন। তিনি আব্দুল জলিলের ছেলে এবং উপজেলার পারশেখ সুন্দর এলাকার বাসিন্দা। হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল-নবী এই তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতার ওই ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন (৩৫)। তিনি উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজশেখ সুন্দর এলাকার আক্কেল আলীর ছেলে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- আক্কেল আলীর ছেলে মো. আব্দুল করিম (৪৮), মো. ফজল হক (৪০), বাবুল হোসেন (৩০)। জব্বার আলীর ছেলে আবু তালেব (৬০), মো. ফজল হকের ছেলে মো. আব্দুল মান্নান (৩৫) ও মো. শফিক (৩২) এবং নীলফামারীর ডিমলা থানার খড়িবাড়ি এলাকার আজিবর রহমানের ছেলে আসাদুল (৩৫)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, শাহজামাল তার স্ত্রী মোছা. শাফিয়া বেগমের চাচাতো ভাই জাহিদ হাসান এবং আতিক হাসানের কবলা খরিদাসহ ভোগদখলীয় জমি মো. আনারুল ইসলাম বর্গা হিসেবে ভোগদখল করে আসছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ওই জমিতে আমন ধান রোপণ করেন বর্গাচাষি আনারুল ইসলাম।

ধান পাকার আগে থেকে ওই জমি-জমার বিরোধ নিয়ে গত ১০ অক্টোবর মামলার আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠি, রড, ধারালো ছোরা নিয়ে জমিতে আসে। সঙ্গে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ধান কাটা মেশিন ও ধান বহন করার ট্রলি নিয়ে এসে অবৈধভাবে ধান কাটা শুরু করে। বর্গাচাষি আনারুল ইসলাম ধান কাটতে বাধা দিলে হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখায় এবং খুন করার হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে তিনি চলে আসেন। এরপর আব্দুল করিমের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা ৬৯ শতক জমির ৪০ মণ ধান ( মূল্য ৫০ হাজার টাকা) কেটে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে অনেকে দেখলেও প্রতিনাদ করার সাহস পায়নি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বর্গাচাষি আনারুল ইসলাম বলেন, জমির মালিকের সঙ্গে অন্য একটি জমির বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরে আমার ৬৯ শতক জমির ৪০ মণ ধান কেটে নিয়ে গেছে। এ বছর বৃষ্টির অভাবে ধান চাষ করতে অনেক খরচ হয়েছে। অনেক ঝণ করে ধান চাষ করেছি। এ কষ্টের ধান তারা অবৈধভাবে কেটে নিয়ে গেছে। আমি এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আমার ধান ফেরত চাই।

জমির মালিক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার ছেলে শাহজামালের সঙ্গে অন্য একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল আসামিদের। ওই জমির রায়ও আমার ছেলে পেয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে আমাকে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিল আসামিরা। আমি অন্যত্র ব্যস্ত থাকায় আমার বর্গা দেয়া জমির পাকা ধান আসামিরা ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে সন্ত্রাসী কায়দায় কেটে নিয়ে গেছে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে আসামি আব্দুল করিম বলেন, আমার জমির ধান কেটে নিয়েছে তারা। এজন্য তার জমির ধান আমি কেটে নিয়েছি। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান বলেন, ধান কেটে নেয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধান উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply