মিরপুর টেস্ট: প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ

|

চেনা মাঠ, চেনা দৃশ্য। ব্যাটাররা ব্যাট হাতে নামছেন, আবার ব্যর্থ হয়ে ফিরছেন। এই দৃশ্য যেন বাংলাদেশের ব্যাটারদের রোজকার। টেস্ট ম্যাচ হলে ব্যাটারদের বিবর্ণ চেহারা আরও বেশি ফুটে ওঠে। এবারও হলো তাই। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানেই গুটিয়ে গেছে শান্তর দল। মাত্র ৪০ ওভার টিকতে পেরেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) মিরপুরে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটিং নেমে কোনো ব্যাটারই লড়াই চালাতে পারেননি। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে কোনোরকমে ১০০ পার করেছে তারা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে জয়ের ব্যাট থেকে। ছয়জন ব্যাটার এক সংখ্যার রানের ঘরে ফিরেছেন।

মিরপুরে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইয়ান মুল্ডারের বলে শূন্য রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান সাদমান ইসলাম। ফুল লেংথ ডেলিভারি ছিল। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে বল চলে যাচ্ছিল। ইনিংসের শুরুতে সেই বল চেজ করে অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের ওপেনার। এতে ৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর উইকেটে আসেন মুমিনুল হক।

শুরু থেকে নড়বড়ে মনে হচ্ছিল মুমিনুলকেও। যদিও উইয়ান মুল্ডারের ওভারে দ্বিতীয় বলে চার মেরে জড়তা কাটিয়ে ওঠার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু টিকতে পারেননি তিনিও। ওভারের চতুর্থ বলটা মিডল স্টাম্পে ফেলে কিছুটা সুইং করিয়েছিলেন মুল্ডার। সেই বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার কাইল ভেরেইনাকে ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান মুমিনুল।

সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হকের পর ফিরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও। এতে ২১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে বাংলাদেশ। তিন টপঅর্ডারের ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরতে পারেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। রাবাদার বলে যখন বোল্ড হয়ে ফিরে যান তখন দলের রান মাত্র ৪০। আশা দেখাতে পারেননি লিটনও। ব্যক্তিগত ১ রানে রাবাদার বলে স্ট্রাবসের হাত স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৪৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ফিল সিমন্সের দল।

বেশ কয়েকমাস ধরে ব্যাটে দলের জন্য ভালোই অবদান রেখে চলেছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে দিয়ে সাকিব আল হাসানের শূন্যতা পূরণের স্বপ্ন দেখছে টিম ম্যানেজমেন্ট। গতকাল অধিনায়ক শান্তও সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সাকিবের রিপ্লেসমেন্ট মিরাজ। সেই মিরাজও আজ হতাশ করেছে টাইগার শিবিরকে। মাত্র ১৩ রানে মহারাজের বলে লেগবিফোরের ফাঁদে কাটা পড়েন মিরাজ। এতে ৬০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দু‘দল।

বিরতির পরও ভাগ্য বদলায়নি বাংলাদেশের। আসা যাওয়ার মিছিলে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা চালান ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তবে ব্যক্তিগত ৩০ রানে পিয়েটের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। তার বিদায়ে ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া জাকের আলী অনিকও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। জয়ের বিদায়ের তিন বল পরে তিনিও সাজঘরে ফেরেন। অভিষেক ইনিংসে তার অবদান মাত্র ২ রান।

৭৬ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ১০০ ছাড়ানো নিয়ে ছিল তখন শঙ্কা। তবে তাইজুল ইসলাম ও স্পিনার নাঈম হাসানের ব্যাটে দলীয় ১০০-পার করতে পারে বাংলাদেশ। তবে শুনতে অবাক লাগলেও এই ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটিটিও গড়েছেন তারা। ২৬ রানের এই জুটি ভাঙেন প্রোটিয়া পেসার রাবাদা। তার বলে মুল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাঈম। আর মহারাজের বলে ১৬ রানে তাইজুলের বিদায়ে ইতি ঘটে বাংলাদেশের ইনিংসের।

প্রোটিয়াদের পক্ষে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন কাগিসো রাবাদা, ‍উইয়ান মুল্ডার ও কেশব মহারাজ। একটি উইকেট পেয়েছেন পিয়েট।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply