ফয়সাল মাহমুদ:
ভূমি অধিগ্রহণ, অর্থায়নসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ একযুগ পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও অংশটি চালু হয়। তবে এখনও প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ বাকি রয়েছে।
২০১১ সালে এই প্রকল্পটির কাজ পায় থাইল্যান্ডভিত্তিক ইটাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। এর আট বছর পর অর্থ সংকটের কারণে চাইনিজ প্রতিষ্ঠান স্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ও সিনোহাইড্রো করপোরেশরনের কাছে ৪৯ ভাগ শেয়ার বিক্রি করে দেয় কোম্পানিটি। ফলে চীনের দুটি ব্যাংক থেকে ঋণ অনুমোদন হয়। এরপর ২০২৩ সালে প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ চালু হয়।
এদিকে, প্রকল্পটির একাংশ চালু হলেও শর্ত অনুযায়ী চীনা ব্যাংকের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় ইটাল-থাই। পরে ঋণ বন্ধ করে কোম্পানিটিকে সিনোহাইড্রো ও স্যাংডং করপোরেশরনের কাছে আনুপাতিক হারে শেয়ার হস্তান্তরের পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর শেয়ার হস্তান্তর ঠেকাতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর আদালতের দ্বারস্থ হয় ইটাল-থাই। দেশের উচ্চ আদালত বিষয়টি খারিজ করে দেয়ার পর গত সোমবার (২১ অক্টোবর) একই আদেশ দেন সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল আর্বিটেশন আদালত।
এই রায়ের ফলে প্রকল্পটির শেয়ার হস্তান্তরসহ অন্যান্য জটিলতা কেটে গেছে। এতে ৮ মাস বন্ধ থাকার পর বাকি অংশের নির্মাণ কাজ চালু হতে যাচ্ছে। আগামী নভেম্বর থেকে মাসের মধ্যেই প্রকল্পটির তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী অংশের নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্পটির পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আক্তার।
প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আক্তার বলেন, শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি গত সোমবার সিঙ্গাপুরের আদালত খারিজ করে দিয়েছে। ফলে এখন চীনা দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে ইটাল থাইয়ের শেয়ার হস্তান্তরে বাধা নেই।
এদিকে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের প্রকল্পটির ২৭ ভাগ সরকারের মালিকানায় রয়েছে। নির্মাণে বিলম্বের কারণে একদিকে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্যদিকে জনস্বার্থ ব্যাহত হচ্ছে।
এএইচএম শাখাওয়াত আক্তার আরও বলেন, সুদ পরিশোধ না করায় এক্সিম ব্যাংক ঋণ দেয়া বন্ধ রেখেছিল। এখন রায় চায়নার পক্ষে আসায় তারা সুদের টাকা পরিশোধ করবে। ফলে ব্যাংক যথারীতি ঋণ দেবে। বর্তমানে এখানে ব্যাংকের কোনও জটিলতা নেই। দ্রুতই তারা কাজ শুরু করবে।
২০২৫ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ হওয়ার কথা রয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্পটির পরিচালক শাখাওয়াত আক্তার।
প্রসঙ্গত, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে বর্তমানে প্রতিদিন দ্বিগুণেরও বেশি যানবাহন এই সড়কটি ব্যবহার করছে। ফলে সড়কের যানজটের ভোগান্তি কমাতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রাখছে।
/আরএইচ
Leave a reply