তৌহিদ হোসেন:
দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসা নিয়ে কম জটিলতা হয়নি। জুলাইতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে থমকে যায় ব্যাংকিং। লেনদেন বাড়ে হুন্ডিতে। তার ওপর বিগত সরকারকে অসহযোগিতার জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠাতে প্রচারণা চলে জোরেশোরে। ভাটা পড়ে প্রবাসী আয়ে। কিন্তু নতুন সরকার দায়িত্ব চাঙা হয় এ খাত।
ব্যাংকের মাধ্যমে এখন রেমিট্যান্স পাঠানোর হিড়িক। অক্টোবর শেষ হওয়ার আগেই এসেছে ১৯৪ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। তার মানে কম-বেশি ৯শ’ কোটি টাকা আসছে দিনের হিসাবে। ২৪০ কোটি ডলার এসেছে আগের মাস সেপ্টেম্বরে। একক ব্যাংক হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এর পরেই আছে অগ্রণী, সোনালী, ব্র্যাক ও জনতা ব্যাংকের নাম।
প্রবাসীরা বলছেন, দেশে টাকা পাঠানোর খরচ কমানো গেলে বৈধ পথে ডলার আসার পরিমাণ আরও বাড়বে। যদিও ব্যাংকারদের ধারণা, হুন্ডির চক্র সহসাই ভাঙা কঠিন।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বললেন, প্রবাসী আয়ের অবস্থা বর্তমানে তুলনামূলক ভালো। এই ডিসেম্বরের মধ্যে তা ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো গেলে, সেই প্রচেষ্টাটা যদি আমরা নিই, তাহলে আর্থিক খাতের জন্য তা বড় সহায়ক হবে। আমাদের আমদানিটাও আরেকটু বড় দরকার।
ব্যাংকে ইদানিং এলসির চাহিদা কম। কমেছে বিদেশে ভ্রমণ আর চিকিৎসা নিতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা। আবার জানুয়ারির আগে পড়ালেখাকেন্দ্রিক বিদেশে ডলার পেমেন্টের চাপও তৈরি হবে না। এ অবস্থায় রেমিট্যান্স হিসেবে যে ডলার দেশে আসছে, তা যেন আবার হুন্ডি হয়ে বিদেশে পাচার না হয়, সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, প্রবাসীদের জন্য একটা কার্ড করা যেতে পারে। আমরা তাদের আরও কীভাবে সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি, যেমন তারা যখন দেশে আসবে, কিংবা তাদের সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে ভাবা দরকার। বলা হচ্ছে তারাই সবচেয়ে বড় ভিআইপি, স্বীকৃতিটা যদি দিতে পারি, তারা অনেক বেশি উৎসাহী হবেন এবং ফরমাল চ্যানেলে টাকা পাঠাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, অক্টোবরে দেশের ৯টি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসেনি বললেই চলে।
/এমএন
Leave a reply