২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি। মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক দিন। গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রেই ঘটে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা। নির্বাচনের ফল মানতে নারাজ উগ্র ট্রাম্প সমর্থকরা সুপরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালায় ক্যাপিটল হিলে। যাতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ মৃত্যু হয় ৫ জনের। উদ্দেশ্য- ভোটের ফলকে অস্বীকার করা। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানেই ঘটে নজিরবিহীন এ হামলা।
ক্যাপিটল হিলে দাঙার প্রায় ৪ বছর পার হতে চললেও শেষ হয়নি শঙ্কা। নির্বাচনী ফলাফল ঘিরে আবারও মিলছে সহিংসতার আভাস। নির্বাচনে হারলে ট্রাম্পের ফল মানা নিয়ে মার্কিনীদের মনে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কেননা, মার্কিন গণতন্ত্রে অবিশ্বাসের বীজ বপন হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ধরে। এরইমধ্যে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ভোটে জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন রিপাবলিকান নেতা। হুমকি ধামকি দিয়েছেন তার সমর্থকরাও।
তাই প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনে আরেক দফায় ট্রাম্প হারলে কী ঘটতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে? ২০২০ সালে ক্যাপিটল হিলে হামলার মতো আবারও কি দাঙার শঙ্কা রয়েছে? বিশ্লেষকদের ধারণা, সহজে পরাজয় মানবেন না ট্রাম্প। তাই পুনরাবৃত্তি হতে পারে সহিংসতার।
ইউগভের জরিপ বলছে, এক-চতুর্থাংশের বেশি অংশগ্রহণকারী নাগরিক মনে করেন, ভোটের ফলকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ দেখা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে। ১২ শতাংশের দাবি, ট্রাম্প হারলে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে পারেন অনেক অনুসারী। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং স্কার স্কুলের জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের পরাজয়ে বড় ধরনের সহিংসতা বাধতে পারে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে।
বিষয়টি নিয়ে ওহাইয়ো ইউনিভার্সিটির ইমিরেটাস অধ্যাপক পল বেক বলেন, যদি ট্রাম্প হারেন তাহলে তিনি তার পরাজয় মানবেন না। হার ঠেকাতে তিনি সবকিছু দিয়েই চেষ্টা করবেন। কিন্তু ২০২০ সালের সাথে ২০২৪ এর পার্থক্য হলো, ট্রাম্প এখন প্রেসিডেন্ট নন। তাই ক্ষমতার সর্বোচ্চটুক প্রয়োগ না করতে পারলেও তিনি অনেক দূর এগোতে পারেন। ২০২০ কিংবা ২০২১ সালের পুনরাবৃত্তি করতে পারেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, নির্বাচনে বেগতিক কিছু ঘটলে প্রতারণামূলক যেকোনো কর্মকাণ্ডের দিকেই ঝুঁকতে পারেন তিনি। পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে ক্যাপিটল হিল দাঙার। ভোটগণনা থামাতে সর্বোচ্চ বল প্রয়োগ করতে চাইবেন তিনি। এরইমধ্যে, কয়েকটি রাজ্যের আগাম ভোটে নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন এই রিপাবলিকান প্রার্থী।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তারা এত এত অর্থ ব্যয় করে। তাও আবার এসব যন্ত্রের পেছনে। তারপরও তারা বলবে আমাদের ফলাফল নির্ধারণ করতে আরও ১২ দিন লাগবে। ডেমোক্র্যাটরা ভোটার আইডি চায় কারণ তারা জানে কারচুপি করার এটিই একমাত্র উপায়। এছাড়া আর কোনো কারণ নেই। দেশ এখন বাঁকা পথে এগোচ্ছে, আমরা তা সোজা করতে যাচ্ছি।
অনেক বিশ্লেষকের মত, পরাজয় ঠেকাতে আইনি লড়াইও চালিয়ে যেতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
/এনকে
Leave a reply