চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: ২ শর্তে হাইব্রিড মডেলে রাজি পাকিস্তান

|

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে কাটছে না ধোঁয়াশা। কোনো সিদ্ধান্তেও আসতে পারছে না আইসিসি। হাইব্রিড মডেল নিয়ে অনলাইনে সভা হলেও পাকিস্তান নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল। ফলে সেই বৈঠক শেষ হয়েছে অমিমাংসিত থেকেই।

তবে বেশ কয়েক দফা চেষ্টার পর এবার পাকিস্তান রাজি হয়েছে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে। তবে এর জন্য জুড়ে দিয়েছে দুইটি শর্ত। যদিও পাকিস্তানের শর্তের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আইসিসি।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম অবজারভার বলছে, পিসিবির শর্তের মধ্যে রয়েছে, আইসিসির রাজস্ব আয় থেকে পিসিবির জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। একইসাথে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারত যতগুলো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব পেয়েছে, সেগুলোও খেলতে হবে হাইব্রিড মডেলে। অর্থাৎ ভারতের যেসব টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে সেগুলো পাকিস্তান নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলবে। পিসিবিও ভারতে দল পাঠাবে না।

সেই প্রস্তাবে আইসিসি রাজি হলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবার আসর গড়াবে আরব আমিরাতের মাটিতে। পাকিস্তান সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আয়োজক দেশ পাকিস্তানে। ফাইনালের ভেন্যু লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। যদি ভারত ফাইনালে ওঠে তাহলে ফাইনালের ভেন্যু সরে যাবে আরব আমিরাতে।

আইসিসির বর্তমান আর্থিক মডেল অনুযায়ী, রাজস্ব আয় থেকে সবচেয়ে বেশি ৩৮ দশমিক ৫০% পেয়ে থাকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), যা বছরে ২৭৫০ কোটি টাকারও বেশি। পিসিবি পায় মাত্র ৫ দশমিক ৭৫%। যা বছরে ৪২৩ কোটি টাকার মতো। কিন্তু হাইব্রিড মডেলের জন্য পাকিস্তানের শর্ত মানা হলে আইসিসি থেকে দেশটির জন্য রাজস্ব বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

এ ছাড়া আগামী ৭ বছরে ভারতে যতগুলো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা, পিসিবির শর্ত অনুযায়ী বিসিসিআইকে সেসব টুর্নামেন্ট হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে হবে। অর্থাৎ, ভারত সরকার পাকিস্তানে রোহিত–কোহলি–বুমরাদের না পাঠানোয় পাকিস্তান সরকারও বাবর–রিজওয়ান–আফ্রিদিদের ভারতে পাঠাবে না।

২০২৫ থেকে ২০৩১—এই ৭ বছরে ভারতে আইসিসির ৪টি বড় ইভেন্ট হওয়ার কথা। ২০২৫ মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৯ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই চার টুর্নামেন্ট খেলতে পাকিস্তান দল ভারতে যাবে না।

দুবাইয়ে অবস্থানরত পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি শনিবার অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন। ম্যাচটি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নাকভি বলেন, অনেক কিছুই চলছে। কিন্তু আমি এই মুহূর্তে বেশি বলতে চাই না। কারণ, এতে সবকিছু পণ্ড হয়ে যেতে পারে। আমরা আমাদের দিকটা আইসিসিকে জানিয়েছি, ভারত ওদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনে পাকিস্তান রাজি কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে নাকভি বলেন, এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, যেন দুই দেশই জেতে। আমরাও জিতি, ভারতও জেতে। আমরা শুধু দেখবো কোনো কিছু যেন একতরফাভাবে না হয়। ক্রিকেটের ভালোর জন্য যেটা করতে হয়, সেটাই করবো। এমন যেন না হয় যে, ভারত আমাদের দেশে কখনোই খেলতে আসবে না আর আমরা বারবার ভারতে যাবো।

রাজনৈতিক বৈরিতায় ২০০৮ সালের পর পাকিস্তান সফরে যায়নি ভারত ক্রিকেট দল। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো ২০২৩ এশিয়া কাপেরও একক আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সরকার পাকিস্তানে দল না পাঠানোয় পিসিবিকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে হয়েছিল। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা। ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া টুর্নামেন্টের অন্য ছয় দল বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply