কলকাতা করেসপনডেন্ট:
কলকাতায় উদ্ধার হওয়া দেহাংশ ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, তা শনাক্তে ডিএনএ নমুনা জমা দিয়েছেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। গত নভেম্বরের শেষ দিকে কলকাতায় নমুনা জমা দেন তিনি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির একটি সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর)।
এর আগে, কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনে আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রায় চারকেজি মাংস উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কৃষ্ণমূর্তি এলাকার ভাঙ্গরের একটি খাল থেকে মানবদেহের একাধিক হাড়গোড় উদ্ধার হয়।
পরে উদ্ধারকৃত ওই মাংস ও হাড়গোড় পরীক্ষার জন্য সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। এরপর প্রাথমিক প্রতিবেদনে উদ্ধারকৃত মাংস ও হাড়গোড়গুলো পুরুষের বলে জানানো হয়। তবে সেই খণ্ডাংশগুলো এমপি আনারের কি না, তা নিশ্চিত হতেই ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়। এরপর গত নভেম্বরে কলকাতায় সিআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন ডরিন। এ সময় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারী সংস্থা।
গত ১২ মে ভারতে গিয়েছিলেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। সেখানে তিনি পূর্ব পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের পশ্চিমবঙ্গের বরানগরে বাড়িতে যান। পরদিন চিকিৎসার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। ওইদিন রাতেই কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের বহুতল আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। তার নির্দেশেই জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদসহ চারজন এমপি আনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত সিয়াম হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে জানান, এমপি আনারকে হত্যা ও খণ্ড-বিখণ্ড করে মরদেহ-গুমের ঘটনায় যুক্ত ছিল সে। নিউটাউনের ওই বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজেও সিয়ামকে দেখা যায়।
সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া আরেক অভিযুক্ত কসাই জিহাদ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, হত্যার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে এমপি আনারের শরীর থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে ক্যারিব্যাগে ভরে রাখা হয়। পরে মরদেহের টুকরোগুলোকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙ্গড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়।
এই ঘটনায় গত আগস্টে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা আদালতে প্রায় ১২০০ পাতার চার্জশিট জমা দেয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স আইনে মামলা দেয়া হয়।
/আরএইচ/এমএন
Leave a reply