ভারতের অন্যতম বৃহৎ পোশাক রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান রেমন্ড গ্রুপের সম্পত্তি নিয়ে চলছে পারিবারিক অন্তঃকোন্দল।
অন্তঃকোন্দলের জের ধরে বোর্ড থেকে বহিষ্কার হন গ্রুপের চেয়ারম্যান এমিরেটাস বিজয়পুৎ সিংঘানিয়া।
এর শুরুটা হয় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারীতে রেমন্ডের চেয়ারম্যান বিজয়পৎ সিংঘানিয়ার ছোট ছেলে গৌতম সিংঘানিয়াকে রেমন্ডস লিমিটেডের ১০৪১ কোটি টাকা মূল্যের ৩৭.১৭ শতাংশ শেয়ার উইল করে দেয়ার মাধ্যমে।
এর ফলে তখনই পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ এনে মুম্বাই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন বড় ছেলে মধুপতি সিংঘানিয়ার চার ছেলেমেয়ে অনন্যা, রসালিকা, তারিনি ও রাইবত্ সিংঘানিয়া। এই মামলায় তারা তাদের দাদা বিজয়পৎ সিংঘানিয়ার পাশাপাশি তাদের বাবা-মা কেও বিবাদী পক্ষ করে।
তবে এর কোনটিই সুখকর হয়নি বিজয়পৎ সিংঘানিয়ার জন্য। ছোট ছেলে গৌতম সিংঘানিয়াকে তিনি রেমন্ডের চেয়ারম্যান করলেও ধীরে ধীরে তার সাথেও সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে বিজয়পৎ সিংঘানিয়ার।
এর এক পর্যায়ে বর্তমান চেয়ারম্যান গৌতম তার বাবার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে তাকে তার বিলাসবহুল এ্যাপার্টমেন্ট ও অফিস থেকেও বের করে দেন
আর এর ফলেই বর্তমানে তার পূর্বের নেয়া সিদ্ধান্তের জন্য অনুশোচনা করছেন বিজয়পৎ সিংঘানিয়া।
এর আগে, ২০০৭ সালে একটি চুক্তিতে বিজয়পৎ ৩৬ তলা জে কে হাউসে একটি অ্যাপার্টমেন্ট পেয়েছিলেন। যা তিনি ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাইয়ের উর্বর মালবার পাহাড় এলাকায় অবস্থিত।
সেই চুক্তিতে ফ্ল্যাটের মূল্য তৎকালীন বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম ছিল বলে দেখা যায়।
ফলে গৌতম এই সম্পত্তি রেমন্ড বোর্ডকে বিক্রি না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড বিজয়পৎ এর চেয়ারম্যান এমিরেটাস পদটিও বাতিল করেছিল একই সাথে তাকে বোর্ড থেকে বহিষ্কার করেছিল।
এঘটনার পর বিজয়পৎ অভিযোগ করেন যে তাকে কোম্পানির বোর্ড অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল একই সাথে তার পদ্মভূষণ পুরষ্কারও চুরি গিয়েছিল।
বিজয়পৎ জানান, তিনি গত দুই বছর তার পুত্রের সাথে কথা বলেননি, সম্প্রতি তিনি ২০০৭ সালের একটি আইন অনুযায়ী নিজের মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হওয়ায় সন্তানকে দেয়া উপহার সম্পত্তি ফেরত পেতে আবেদন করবেন। একই সাথে গৌতমকে কোম্পানির শোয়ার দেয়ার ব্যাপারটাকে তিনি তার সবচেয়ে বড় ভুল বলেও আখ্যা দেন।
তিনি আরো বলেন,আমি সব বাবা-মাকে পরামর্শ দেব যে জীবিত থাকাকালে আপনার সন্তানের হাতে নিজের সকল সঞ্চয় তুলে দিয়ে ভুল করবেন না।
কিন্তু বিজয়পতের এমন অভিযোগের ব্যাপারে গৌতম বলেন, আমি পুত্র হিসেবে নই বরং চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যিনি নিজের পদ ব্যবহার করে কোম্পানীর সম্পদ দখল করতে চেয়েছেন।
একইসাথে তার ব্যবস্থাপনায় রেমন্ড একটি সম্পুর্ণ নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে বলেও দাবি করেন গৌতম সিংঘানিয়া।
Leave a reply