পদ্মা সেতুর নাম পদ্মা সেতুই হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

|

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের ওপর একটা অপবাদ দেয়া হলো আমরা নাকি পদ্মা সেতুর টাকা লুটে খেয়েছি। টাকাটা তারা দিলো কোথায় যে সেটি লুটে খেলো। কিন্তু আমি এখানে থেমে যাইনি। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। তোমাদের এই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। আর আমি তোমাদের টাকা নেবো না। যদি পারি নিজের টাকায় করবো। আমি চ্যালেঞ্জ দেয়াতে সেটা তাদের পছন্দ হয়নি। বিশ্বব্যাংককে বরাবর চিঠি লিখা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে সেটির প্রমাণ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা প্রমাণ দিতে পারেনি।

আজ চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মাঝে মাঝে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট আসতো আরেকজন অফিসারকে নিয়ে একটা ব্যাগ নিয়ে। এসে বসে থাকতো। আর বলতো দুর্নীতি হয়েছে। আমি বলেছি, আপনার কাছে কী কাগজ আছে সেটা বের করুন। কে দুর্নীতি করেছে আমি সেটা দেখি। বলতো এখন নাই, পরে দিবো। অনেক চাপাচাপির পরে দুইটা চিঠি পাঠায়। ২০০২ সালে বিএনপির আমলে এক মন্ত্রীর নাম ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে দুর্নীতি করা হয়। সেটা তো বিএনপির আমলে। সেটার সাথে পদ্মা সেতুর সর্ম্পক কী?

শেখ হাসিনা আরো বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে বললাম, দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণ করেন। দুর্ভাগ্যজনক হলো আমাদের দেশের লোক আমাদের বদনাম করে। স্বনামধন্য দুইটি পত্রিকার সম্পাদক ও মালিক এবং সুদের টাকা খেয়ে নোবেল পেয়েছেন যিনি, ওনারা সবাই আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর টাকা দেয়া বন্ধ করায় এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কনাডার কোর্টে মামলা হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এখানে আমাদের দুইটা বছর নষ্ট হয়। অনেকের ধারণা ছিলো অনুদান ছাড়া বাংলাদেশে কোনো উন্নয়ন সম্ভব না। আমি বলেছি, নিজের টাকা দিয়েই করবো। এটা নিয়ে কত যে যন্ত্রনা আর মানসিকভাবে কষ্ট পেতে হয়েছে সেটা আপনারা বুঝবেন না। আমি মনে করি আল্লাহর একটা রহমত আছে, যার কারণে নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করতে পেরেছি। পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। যেহেতু পদ্মা সেতু নিয়ে এতো কিছু হয়ে গেছে তাই এটার নাম পদ্মা সেতুই থাকবে। এটার সাথে আর কোনো নাম যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নাই।ৱ

এদিকে সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রকল্প। টানেল নির্মাণের শতভাগ ঋণ সুবিধা দেয়ায় চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। এছাড়া চট্টগ্রাম ঘিরে সরকারের নানা উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। পদ্মা সেতু নির্মাণ সহ বড় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নেই বাধা-বিপত্তি ও চ্যালেঞ্জ এসেছিলো, সেসব মোকাবেলা করেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply