সোমবার দিবাগত রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মিরের লাইন অব কন্ট্রোল সীমানা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া দেশটির সরকারের বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানাচ্ছে, লাইন অব কন্ট্রোলের ওপারে তিনটা স্থানে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী।
এর মধ্যে বালাকোটে বোমা বর্ষণ করা হয় রাত ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত, মুজাফ্ফরাবাদে বর্ষণ করা হয় ৩টা ৪৮ মিনিট থেকে ৩ ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, আর চকোটিদে হামলা চলে রাত ৩টা ৫৮ মিনিট থেকে ৪টা পর্যন্ত।
ভারত সরকারের একাধিক সূত্র এবং ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের ওপর মোট ১ হাজার কেজি ওজনের বোমা বর্ষণ করা হয়েছে।
এ বড় ধরনের হামলায় পাকিস্তান বা বিদ্রোহীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কী? এমন প্রশ্নের সঠিক কোনো জবাব মিলছে না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দেশটির সরকার ও বিমান বাহিনীর বরাতে জানাচ্ছে, শুধু বালাকোটে অন্তত ৩০০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। ভারতীয় পত্রিকা ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করা হয়েছে।
দোহা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকেও ভারতের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিমান বাহিনীর অভিযানে ‘বেশ বড় সংখ্যক’ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্রোহী সংগঠন জয়শে মোহাম্মদ এর আস্তানাগুলো ‘একেবারে শেষ করে দেয়া হয়েছে’।
অপরদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তর ঢুকে বিমান থেকে একটি গ্রামে বোমা বর্ষণ করেছে। কিন্তু তাতে কেউই হতাহত হয়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ অধিদপ্তর থেকেও হামলার সত্যতা নিশ্চত করা হয়েছে। তবে জানানো হয়েছে, এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, বালাকোট নামক যেই এলাকায় ৩০০ জন বিদ্রোহী নিহত হওয়ার দাবি করা হচ্ছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে, সেখানে আসলে একজন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন রয়টার্সকে বলেছেন, গভীর রাতে তারা চারটি বিশাল ধরনের বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েছেন। এতে বেশ কিছু গাছপালা ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া একটি কুড়েঘর ও স্প্লিন্টারে একজন লোক আহত হয়েছেন।
ওই এলাকার ২৫ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ আজমল সকালে ঘটনাস্থল দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি গাছ পড়ে আছে, একটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর বোমার আঘাতে চারটি বড় গর্ত হয়েছে।
Leave a reply