ফররুখ মাহমুদ:
আগামী ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে অংশ নেবে ছাত্রলীগ। নির্বাচনী কাজ পরিচালনার জন্য সংগঠনটি গত দুইদিনে ২৮০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ একটি পক্ষকে বাদ দিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে বঞ্চিতদের অনেকেই। দেখা করেছে ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্রলীগকে দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতার সাথেও।
জানা যায়, গতকাল ১৭০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এর পরপরই যারা কমিটিতে স্থান পায়নি তাদের মধ্য থেকে অনেকেই ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন লিখেন, ‘বিগত দুই কমিটি থেকে দেখা, নেতা সাবেক হওয়ার পর তাকে নিয়ে সবচেয়ে স্পর্শকাতর কটু কথা বলে মাই ম্যানরা। অথচ নেতারা মাই ম্যান খুঁজতে খুঁজতে হয়রান।’
সাবেক উপ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক লতিফুল ইসলাম নিপুল লিখেন, ‘হয়তো শুধু মাঠের রাজনীতিটাই বুঝি তাই কাগজের পাতায় অবহেলিত।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ১নং সহ সভাপতি মো. রুম্মন হোসেন লিখেন, ‘গতকালকের একটা লিস্টে চোখ বুলালাম এবং দেখলাম দায়িত্বে আসার মতো রাজনীতিটা আসলেই করি নাই মনে হয় কোন দিন!? আমার নাম সহ আরও কিছু নাম খুঁজলাম পেলাম না। আহ আমার ভালোবাসার সংগঠন। প্রতিহিংসার রাজনীতি তাহলে এখনও চলে।’
সূত্র জানায়, প্রথম দফা তালিকা প্রকাশের পর বঞ্চিতদের একটি পক্ষ রাতে দেখা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে। সেখানে তারা আলোচনার পর ২০ জনের নাম জমা দেন। কিন্তু সেই তালিকা থেকেও মাত্র ৪/৫ জনকে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত ৯০ জনের তালিকায় যুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গত কেন্দ্রীয় কমিটির এক সম্পাদক বলেন, আমারা যারা বিগত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের রাজনীতি করেছি তাদের ইচ্ছে করেই বাদ দেয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের কমিটিতেও আমাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। বাদ দেয়াও হয়েছিলো বেশ কয়েকজনকে। এবারও একইভাবে কমিটি করা হয়।
হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা কমিটিতে স্থান পায়, আর আমরা ঘুরে বেড়াই। সোমবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সাথে দেখা করে ২০ জনের নামের তালিকা দিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আজ দেখলাম সেখান থেকে ৪/৫ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবুও আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে দেখা করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেন, কমিটিতে নাম আসলে ভালো লাগতো। যেহেতু ছাত্রলীগ করছি তাই নাম না আসলেও প্যানেলের জন্য কাজ করবো।
অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও ভিপি প্রার্থী রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, এটা ডাকসু নির্বাচনী কমিটি। আমরা নিজেরা কারো নাম দেয়নি। নাম চাওয়া হয়েছে। যাদের নাম এসেছে তাদের দিয়েছি। অনেকে বাদ পড়েছিলো। তাদের মধ্য থেকে আজ কিছু যোগ করা হয়েছে। বাকিদেরও যোগ করা হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং করে লাভ নেই।
Leave a reply