পাবনা প্রতিনিধি
‘খুব শিগগির বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল, এজন্য নতুন বাড়ি করতে ইটও কিনেছিলেন। কিন্তু বিয়ে করে সংসারী হওয়ার সাধ পূরণ হলো না পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার চরপাড়া গ্রামের আমির হোসেন রাব্বির। ঢাকার বনানীতে এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে নিহত হয়েছেন তিনি।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামের বাড়িতে। শোকের মাতমে ভারি হয়ে উঠেছে এলাকার বাতাস। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা-মা। শোকাহত পরিবারের পাশে ছুটে গেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।
রাব্বী ছিলেন তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। পাবনার শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে এইচএস সি ও এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এম এ পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন ঢাকা বনানীর এফ আর টাওয়ারের ১১ তলার ইকোলাইন বিডি লিমিটেড নামের একটি কোম্পানীতে।
গেলো মাসে পাবনাতে এসে পিতামাতার সাথে সময় কাটিয়ে গেছেন রাব্বী। বাড়ির কাজে হাত দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন বলে বেশ কিছু ইটও কিনে বাড়ির পাশে রেখে পিতামাতার দোয়া নিয়ে চলে যান ঢাকায়। আবারও তার বাড়িতে আসার কথা ছিলো এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু ২৮ মার্চে বনানীতে তার চাকরিস্থল এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে অকালে সে চলে যায় না ফেরার দেশে।
পিতা আইয়ুব আলী জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে পাবনায় গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন রাব্বী। বিয়ে করবে বলে ঘর করতে কিছু ইটসহ সরঞ্জাম কিনে বাড়িতে রেখেছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। কিন্তু আমার ছেলে এভাবে বাড়িতে আসবে ভাবতে পারিনি।
চাচা আব্দুর রশিদ জানান, ভাতিজা রাব্বী যে ভবনে থাকে সেখানে অগ্নিকাণ্ডের খবর জেনে ঢাকা ছুটে যাই। সেখানে রাব্বীর বন্ধু মাসুদ রানাকে সাথে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মরদেহ সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে আসি।
এদিকে নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। শুক্রবার সকালে আমির হোসেন রাব্বীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক নিহতের পরিবারকে বিশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
নিহত আমির হোসেন রাব্বীর মরদেহ ঢাকা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। পরে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
Leave a reply