ফেসবুকের কল্যাণে ৩০ বছর পর বাবাকে পেল সন্তানরা!

|

ফেসবুকের কল্যাণে অবশেষে স্ত্রী তার স্বামী আর সন্তানরা তাদের বাবাকে খুঁজে পেল প্রায় ৩০ বছর পর।

স্ত্রীর জীবন থেকে স্বামী হারানোর বেদনা এবং সন্তানদের কাছ থেকে বাবার স্মৃতি চিরতরে মুছে যাওয়ার শেষপ্রহরে ফেসবুকের কল্যাণে জবেদ শিকদারকে ফিরে পাওয়ায় তাদের জীবনে নতুন করে বেঁচে থাকার এক আলোকবর্তিকার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।

পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত এফের শিকদারের বাড়িতে বইছে এখন আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার সমারোহ।

মঙ্গলবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের নারী পুরুষ, ছেলে যুবক সবাই ভিড় করছে এত বছর পর ফিরে আসা ৬০ বছরের বৃদ্ধ জবেদ শিকদারকে এক নজর দেখার জন্য। কারও চেহারা মনে আছে আধো আধো, আবার কারোরই চেহারা মনে নেই জবেদ শিকদারের।

জবেদ শিকদারের স্ত্রীসহ তার দুই ছেলে ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছেন।

তার দুই ছেলে হাফেজ মুফতি মো. আবুল বাসার ও মাওলানা হাফিজুর রহমান ফিরোজ জানান, তাদের বাবা ছিলেন ওই গ্রামের একজন অত্যন্ত শান্ত ও সাদামাটা নরম স্বভাবের মানুষ। গৃহস্থের কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন।

তারা জানান, তাদের বাবার বয়স যখন ৩০-৩২ বছর তখন তিনি কাজের সন্ধানে বাড়িতে দুই মাসের খোরাক রেখে চট্টগ্রামে চলে যান। এর ছয় মাস পরে তার স্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন অর্থের সমস্যা হলে আত্মীয়দের কাছ থেকে ধারদেনা করে সংসার চালাতে। তিনি শিগগিরই ফিরে আসবেন বলেও জানান।

এরপর তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি এবং কোনো যোগাযোগও রাখেননি। তখন বড় ছেলের বয়স মাত্র সাত বছর।

পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল রাঙ্গামাটি জেলা সদরের রিজাব বাজার থেকে রহমত আলী নামের এক লোক ফেসবুকে জবেদ শেখের ছবিসংবলিত ও ঠিকানা লিখে একটি লেখা পোস্ট দেয়। পিরোজপুরের ঝনঝনিয়া গ্রামের হাসান হাওলাদার ফেবুকের ওই লেখাটি দেখে জবেদ শেখের ছোট ছেলে হাফিজুর রহমান ফিরোজকে বিষয়টি জানায়।

পরে ছেলেরা রাঙ্গামাটির ঠিকানায় গিয়ে অসুস্থ ও অসংলগ্ন কথাবার্তা অবস্থায় ব্যবসায়ী রহমত আলীর বাড়িতে গিয়ে জবেদ শেখকে দেখতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হন এবং তাদের বাবাকে নিয়ে আসেন। পরে ঢাকায় এনে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তাদের পিতাকে। বর্তমানে জবেদ শেখ স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন ও অনেককে চিনতে পারছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply